সন্ত্রাসী-দখলদার ইসরায়েল কর্তৃক গাজায় নির্মম ও নিষ্ঠুর গণহত্যার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ, আরব লীগ, ওআইসি ও কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর বাড্ডায় উত্তর বাড্ডা কামিল মাদরাসার সামনের সড়কে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে এ সব কথা বলেন তিনি। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত, মুহিব্বুল্লাহ, জামাল উদ্দিন, প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার, নাসির উদ্দীন, মহানগর পশ্চিম শিবির সভাপতি সালাহ উদ্দিন প্রমুখ। বিশাল মিছিল উত্তর বাড্ডা কামিল মাদ্রাসার সামনে থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রামপুরা ব্রিজে এসে পথসভার মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিলোত্তর সমাবেশে ড. রেজাউল করিম বলেন, পবিত্র মাহে রমজান মাসে সন্ত্রাসী অবৈধ রাষ্ট্র শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় হামলা ও নির্মম গণহত্যা চালিয়ে বিশ্বের সাড়ে ৭০০ কোটি মানুষের কলিজায় আঘাত করেছে। এ হামলার মাধ্যমে তারা শুধু শান্তিচুক্তি ভঙ্গই করেনি বরং যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু এ সব করে দখলদার আগ্রাসী বাহিনীর শেষ রক্ষা হবে না বরং অচিরেই ইসলাম ও মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত হবে। তিনি অতীতের ইতিহাস টেনে বলেন, ইতিহাস সাক্ষী মুসলমানরা কখনো পরাজিত হয়নি বরং পবিত্র মাহে রমজানে ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধে সীমিত সামর্থ্য ও জনবল নিয়ে বিশাল কাফির বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। তাই জায়নবাদী নির্মমতায় মুসলিম উম্মাহর বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বরং চূড়ান্ত বিজয় গাজা ও ফিলিস্তিনবাসীর জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি ইসরায়েলী বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় ও আত্মসচেতন মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় জায়নবাদীরা গোটা বিশ্বকেই অস্থির করে তুলবে।
তিনি বলেন, গত প্রায় ১৬ বছর পতিত আওয়ামী বাকশালী ও ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশে অপশাসন, দুঃশাসন ও নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে। তারা ইসরায়েল থেকে অস্ত্র আমদানি করে জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী দলের ওপর ব্যাপক গণহত্যা চালিয়েছে। তিনি অবিলম্বে এটিএম আজহারসহ আলেমণ্ডওলামাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। মহানগর কমিটির সেক্রেটারি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়নি। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে এখনো পতিত স্বৈরাচারের প্রতিভূরা সক্রিয় রয়েছে। তাই দেশকে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের প্রভাবমুক্ত করতে সবার আগে ফ্যাসিবাদী ও তাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। খুনিদেরকে কোনো ভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না। প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরই নির্বাচন হতে হবে উল্লেখ করে ছাত্রশিবিরের সাবেক এ কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, সংস্কার, বিচার ও আগে স্থানীয় নির্বাচন ছাড়া জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না। যারা সংস্কার ছাড়াই নির্বাচন চাচ্ছেন তারা জাতীয় স্বার্থের বিপরীতে নিজেদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভণ্ড ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনে থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির আবদুল জব্বারের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির আব্দুল কাইউম, সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি জামাল হোসাইন, এইচএম নাসির হোসাইন ও প্রচার সম্পাদক হাফেজ আব্দুল মোমিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির আবদুল জব্বার বলেন, একজন মুসলমান হিসেবে আমি অত্যন্ত বিক্ষুব্ধ এবং অত্যন্ত শোকাহত। এই সময়ে ইসরাইল বাহিনী ফিলিস্তিনের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুকে নির্বিচারে হত্যা করছে। আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। সেজন্য আমরা নারায়ণগঞ্জে শোকাহত হয়ে ইসরাইল বাহিনীর বর্বর হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজ জাতিসংঘ আমেরিকা কোথায়? মানবতার কথা বলে অথচ তাদের ইন্ধনে ইসরাইল বাহিনী ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনে আমেরিকাসহ যারা ইসরাইলকে ইন্ধন দিচ্ছে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। আমরা বাংলাদেশ থেকে বলতে চাই, দ্রুততম সময়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। সরকারকে বলতে চাই, বাংলাদেশ থেকে রেড ক্রিসেন্টের মাধ্যমে চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করে ফিলিস্তিনি মানুষের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে হবে। এ সময় তিনি বিশ্বের সকল শান্তিকামী মানুষকে ফিলিস্তিনের পাশে থাকার আহবান জানান।