মতভিন্নতা থাকলেও যে কোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল ১২ দলীয় জোটের ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই আহ্বান জানান। তারেক রহমান বলেন, আমাদের যে কোনো মূল্যে ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে। মত-ভিন্নতা থাকবে, আমরা বসব, আলোচনা করব। এমন কিছু বলব না এবং এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকব যাতে করে কোনোভাবেই স্বৈরাচার বা তার প্রেত্মাতারা আবার এদেশের মানুষের কাঁধে চেপে বসতে পারে।
আন্দোলনে সহকর্মী ও আপনজনদের হারানোর কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, আসুন, যে ঐক্যকে নিয়ে আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করেছিলাম, সেই ঐক্যকে আমরা ধরে রাখি। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে আগামী দিনে এই ঐক্যকে বজায় রেখে, এদেশের মানুষের প্রত্যাশিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষের প্রত্যাশিত সংস্কার প্রক্রিয়া আমরা সকলেই মিলে আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করব। আড়াই বছর আগে পরিবর্তনের লক্ষ্যে ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের প্রস্তাব উত্থাপনের বিষয় উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দুঃখজনকভাবে আমরা দেখছি, একটি পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে যেখানে সংস্কার এবং নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র বলতে সাধারণ মানুষের কাছে কি বুঝা যায়? সাধারণ মানুষের কাছে এটি নির্বাচন, নির্ভয়ে ভোট দেয়ার সিস্টেম যা আমরা গণতন্ত্র বলি। তারেক রহমান বলেন, কেউ কেউ বলছেন যে সংস্কার শেষ হবে তারপর নির্বাচন হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, যেটা শেষ হয়ে যায় সেটা তো সংস্কার হতে পারে না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় যে গাফেলতিগুলো আছে, তা সংস্কার করব এবং সময়ের সঙ্গে আরও ভালো ব্যবস্থা করব। দেশের মানুষের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও উন্নত করব।
তিনি আরও বলেন, আমরা যারা এখানে আছি, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দ, আমাদের রাজনৈতিক ভিন্নমত আছে, আদর্শ সবার এক নয়, কিন্তু একটি জায়গায় আমরা সবাই এক- তথা বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ ও গণতন্ত্র। এখানে কোনো বিভেদ নেই। ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং মুখপাত্র জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদার সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, বিএনপির সেলিমা রহমান, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আখতার হোসেন, গণ অধিকার পরিষদের ফারুক হাসান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) কাজী নাহিদ।