গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার অপারেটরকে মারধরের বিচার ও ১২ দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন এক্সিস নীটওয়্যারস্ লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর তাদের দাবি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দেয়া হলে শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। এরপর বেলা পৌনে ৩টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, উপজেলার নয়নপুর এলাকার এক্সিস নীটওয়্যারস্ লিমিটেড নামের কারখানার অপারেটর মোশারফ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিল। সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়ে শনিবার বেলা ১১টার দিকে প্রাকৃতিক কাজ সারতে কারখানার শৌচাগারে যান। শৌচাগারে সময় বেশি কাটানো হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সুপারভাইজার আল আমিন। এক পর্যায়ে অপারেটর মোশারফকে মারধর করা হলে অসুস্থতা বোধ করেন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় তানিয়া মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ও অভিযুক্ত সুপারভাইজার আল আমিনের শাস্তির দাবিতে কারখানার প্রায় ২ হাজার শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। মহানগরের বাসন থানা এলাকায় জায়ান্ট নিট ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে শনিবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-গাজীপুর সড়ক অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। এতে দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা। ঘণ্টা দেড়েক পর পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও শ্রমিকরা বলেন, কারখানা বন্ধ ঘোষণার খবর শুনে সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা প্রথমে চৌরাস্তা-জয়দেবপুর রোড অবরোধ করেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে ভোগড়া বাইপাসের দিকে অগ্রসর হলে চান্দনা-চৌরাস্তা ও চৌধুরী বাড়ি এলাকার বেশকিছু কারখানা ছুটি দিয়ে দেয়। জায়ান্ট কারখানার শ্রমিকরা চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকার বর্ষা সিনেমা হলের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা ঈদ বোনাস না দেয়া ও ঈদে ১০ দিনের ছুটির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন। এসময় শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে মারধরের ঘটনাও ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলার পর কয়েকজন শ্রমিককে পুলিশ আটকও করে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার শ্রমিকরা গিয়ে কারখানা বন্ধ দেখে বিক্ষোভ করে পাশের রাস্তায় নেমে পড়েন। এ ঘটনার পরে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে আশপাশের ৮-১০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা দেয়। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ ও আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।