সুসংবাদ প্রতিদিন : হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের আধুনিক রূপ

বৈদ্যুতিক ঢেঁকিতে সচ্ছলতা

প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এইচএম ইমরান, ঝিনাইদহ

বিদ্যুতে ঘুরছে মোটর। তার সঙ্গে জুড়ে দেয়া প্যাডেল পড়ছে ঢেঁকিতে আর তারই ছন্দে উঠানামা করছে ঢেঁকির মাথা। একের পর এক পড়ছে শুকনো মরিচ, হলুদের ওপর। অল্প সময়েই গুঁড়িয়ে উঠছে লাল-হলুদের ঝাঁজালো গুঁড়ো। এটি কোনো আধুনিক মিল নয়, এটি বৈদ্যুতিক ঢেঁকি। যা একটি হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের আধুনিক রূপ। দেখা মিলেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না গ্রামের মাঝের পাড়ায়। জানা যায়, ওই গ্রামের বিল্লাল হোসেন দীর্ঘদিন ছিলেন ভারতের মুম্বাইয়ে। সেখান থেকেই ধারণা নিয়ে দু’মাস আগে গান্না গ্রামের মাঝের পাড়ায় দুটি ঢেঁকি বসিয়েছেন। নতুন এই পদ্ধতিতে ঢেঁকির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে শক্তিশালী মোটর ও প্যাডেল সিস্টেম। মোটর চালু করলেই ঢেকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওঠানামা করে, আর শুরু হয় মসলা প্রস্তুতের কাজ। সেখানেই বিল্লাল হোসেন করছেন হলুদ, মরিচ, ধুনিয়াসহ নানা ধরনের মসলা তৈরি। যা তিনি নিয়েছেন বাণিজ্যিকভাবে। ঢেঁকিতে গুঁড়ো করা এসব নির্ভেজাল মসলা তিনি বিক্রি করছেন জেলার বিভিন্ন স্থানে। এ দিয়েই তার সংসার চলছে স্বচ্ছলভাবে। সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার এমন প্রয়াসে খুশি স্থানীয়রাও। চোখের সামনে তৈরি হওয়া খাঁটি মসলা কিনে তারা যেন ফিরে পেয়েছেন আস্থার নতুন জায়গা। উদ্যোক্তা বিল্লাল হোসেন ও তার পরিবার জানান, হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সময়োপযোগী প্রযুক্তির ব্যবহার করে এটিকে নিজের পেশা হিসেবে নিয়েছেন তারা। ঢেঁকিতে গুঁড়ো করা এসব নির্ভেজাল মসলা জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে তার সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। বিল্লাল হোসেনের এই দুটি ঢেঁকি তৈরিতে খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। বৈদ্যুতিক ঢেঁকিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ মণ চাল, হলুদ, ধনিয়া, মরিচসহ অন্যান্য মসলা তৈরি করছেন তিনি। যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে গান্না গ্রামে। হারানো এই ঐতিহ্যকে নতুন রূপে ফিরিয়ে আনতে বিল্লালের দেখাদেখি অনেকেই উদ্যোগ গ্রহণ করছেন বলে জানা গেছে।