ট্রেনে ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে; তবে বিলম্ব না ঘটায় তেমন ভোগান্তিতে পড়েননি যাত্রীরা। ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য যারা গত ১৫ মার্চে অগ্রিম টিকেট কেটেছিলেন, তারাই গতকাল মঙ্গলবার ট্রেনে চেপেছেন। গতকাল সকাল থেকে কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ট্রেন আসার সাথে সাথে উঠে পড়েন যাত্রীরা। তাতে প্লাটফর্মে তেমন ভিড় দেখা যায়নি। রাজশাহীগামী যাত্রী আয়েশা আক্তার বলেন, ‘আমি বাড়ি যাওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছি। ট্রেন দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে। একটু আগেই এসেছি। বেলা ১১টা পর্যন্ত কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়া ২১টি ট্রেন ছেড়েছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিদিন ৪৩টি আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। ২৫টি মেইল এক্সপ্রেস-কমিউটার ট্রেন ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। ‘আগামী ২৭ তারিখ থেকে স্পেশাল ট্রেন ছেড়ে যাবে। কোনো রকমের অঘটন বা সমস্যা না হলে ট্রেন বিলম্বের কোনো কারণ নাই।’ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমরা দুজনের টিকেট পেয়েছি, তবে আন্তঃনগর ট্রেনের পাইনি। রাজশাহী কমিউটার ট্রেন দিয়ে যাব। একটু পরেই ট্রেন চলে আসবে।’ গতকাল মঙ্গলবার সকালে ট্রেনে উঠে নিজের আসন নিশ্চিত করেন কিশোরগঞ্জগামী এগারসিন্দুর প্রভাতীর যাত্রী সৈয়দা শাকিলা জাহান। তিনি বলেন, ‘ট্রেন সময় মতোই এসেছে। ট্রেন সাড়ে ১০টায় ছেড়ে যাবে। প্লাটফর্মে তো ১০ মিনিট আগেই আসছে। তাই উঠে বসে আছি। ‘ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আমি আগেই বাড়ি চলে যাচ্ছি ঈদ করতে। তাদের বাবা বৃহস্পতিবার বাড়ি যাবে।’ কমলাপুর স্টেশনে ঢোকার মুখেই বাঁশ দিয়ে কয়েকটি প্রবেশপথ বানানো হয়েছে। তিনধাপে টিকিট পরীক্ষা করে তারপর যাত্রীরা ঢুকতে পারছেন স্টেশন ও প্ল্যাটফর্মের ভেতরে। দু-একজন বিনা টিকিটের যাত্রী পেলে তাদের থেকে ৫০ টাকা জরিমানাসহ গন্তব্য স্টেশনের ভাড়া নেয়া হচ্ছে। বিনা টিকিটে যাতে কোনো যাত্রী ট্রেনে চড়তে না পারেন, সেজন্য তল্লাশি ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন। ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রির তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘৩ তারিখের ফিরতি টিকিট দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ফিরতি টিকিটের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ বিক্রি হয়েছে। ফিরতি টিকিটের ক্ষেত্রে একসাথে এত চাপ থাকে না। “৪ তারিখের টিকিট দেওয়া হয়েছে, ৩৩ হাজার ৮১৭টি টিকিটের বিপরীতে ১৪ হাজার ২০০ টিকিট বিক্রি হয়েছে।” অতিরিক্ত যাত্রী চাহিদা মেটানোর জন্য এবার ৪৪টি কোচ বিভিন্ন ট্রেনে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আর স্পেশাল ট্রেনের মধ্যে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, জয়দেবপুর-পার্বতীপুর, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রুটে প্রতিদিন স্পেশাল ট্রেন চলবে। আর ঈদের দিন চলবে কেবল ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব রুটে।