ঢাকা বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

মধু চাষে স্বাবলম্বী

মধু চাষে স্বাবলম্বী

বগুড়ায় উদ্যোক্তারা মধু চাষের দিকে ঝুঁকছে। এটি বর্তমানে এ জেলায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগের দিনে গাছে গাছে মৌমাছিরা একত্রিত হয়ে চাক বাঁধতো। নির্দিষ্ট সময় পর সেই চাকগুলো কেটে মধু সংগ্রহ করা হতো। বর্তমানে গাছে গাছে মৌমাছির চাক আর চোখে পড়ে না। মধুর চাহিদা পূরণে বিকল্পভাবে মধু চাষ শুরু করেছে মৌচাষিরা। সেইসঙ্গে উদ্যোক্তারাও ঝুঁকছে। উদ্যোক্তারা যে সমস্ত কোম্পানিগুলো মধু বাজারজাত করে, সে সমস্ত কোম্পানিগুলোতে মধু সরবরাহ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, উদ্যোক্তারা বেশি লাভবান হচ্ছে মৌচাষ করে। দেশি-বিদেশি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো মধু চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতিদের। তারা চাকরির দিকে না ছুটে প্রশিক্ষণ নিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ছে।

উদ্যোক্তাদের মধু চাষ অধিক মুনাফা এনে দিয়েছে। এখানকার উৎপাদিত মধু ভেজাল মুক্ত ও গুণগতমান ভালো হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে। শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলি ইউনিয়নের পুরান বাবু জানান, পূর্বে তিনি এনজিওর অধীনে মৌমাছি চাষের চাকরি করত। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে নিজেই মৌমাছি পালন শুরু করেন। মধু সংগ্রহ করে তিনি এখন নিজেই স্বাবলম্বী।

মৌ-চাষিরা জানান, তারা মৌসুমের ৬ মাস মধু সংগ্রহ করে অবশিষ্ট ৬ মাস তাদের অলস সময় পার করতে হয়। এই সময়টাতে তারা বাক্সে মৌমাছি লালন পালন করে থাকেন। তখন তারা মৌমাছিদের বাঁচিয়ে রাখার কৌশল রপ্ত করে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। মৌমাছিদের নিয়ন্ত্রণে এনে মৌচাষিরা তাদের বাক্সে থেকে সবটুকু মধু নিংড়ে নেয়। আর তা বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে। মে মাস থেকে নভেম্বর মাস মাঠে ও গাছে-গাছে ফুল ফোটে না। তখন তারা মৌমাছিকে কৃত্রিম উপায়ে লালনপালন করেন। তখন মৌমাছিদের বাঁচিয়ে রাখতে তারা বাক্সে চিনির রস একটি পাত্রে রাখে। মৌমাছিকে সেই রস খেয়ে খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখেন। এ সময় মৌমাছি প্রাকৃতিক পরিবেশে বিচরণ করতে পারে না তাই তারা দুর্বল হয়ে পড়ে।

এখন আধুনিক উপায়ে মৌচাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানান, আর আরেক চাষি রেজাউল করিম। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে মৌচাষ করে আসছেন। আগে মৌমাছি গাছের মগ ডলে মৌচাক তৈরি করতো। কিন্তু এখন মধু সংরক্ষণের জন্য আদর্শ চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে। এই পদ্ধতিতে মৌমাছি চাষ করে অধিকাংশ চাষি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বাক্স থেকে প্রায় ৫০ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়। বগুড়ায় বেকারত্ব মোচন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বিশেষ ভূমিকা রাখছে। তারা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে আর্থিক সহযোগিতাও দিচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত