ঢাকা শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী

মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ইন্দ্রজিত কুমার মাশরুম চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। উপজেলার হাটফাজিলপুর গ্রামের ইন্দ্রজিত সংসারের হাল ধরতে এই চাষকে বেছে নিয়েছেন। চাকরির পেছনে না ছোটা এ তরুণ বছর ঘুরতেই সফলতার দেখা পান। তিনি মাশরুম বিক্রি করে বছরে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা আয় করেন। তার এই মাশরুম চাষে এলাকাজুড়ে সাড়া পড়েছে। তরুণ এ উদ্যোক্তা উপজেলার হাটফাজিলপুর বাজারসংলগ্ন এলাকার প্রেমচাদ বিশ্বাসের ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে ইতিহাস বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।

জানা গেছে, ২০২১ সালে ওই এলাকায় মাশরুমের চাষ শুরু করেন ইন্দ্রজিত কুমার। এরপর ২০২২ সালে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায় তার প্রতিষ্ঠানটি। বাজারে মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা ও ভালো দাম থাকায় দ্রুতই তার ব্যবসা এগিয়ে যেতে থাকে। গত ৯ মাসে ৫ হাজার কেজি মাশরুম বিক্রি করেন তিনি। যার আনুমানিক মূল্য ১০ লাখ টাকার উপরে। আর এ টাকা আয় করতে তার খরচ হয়েছে ৪ লাখের মতো।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দেশবন্ধু মাশরুম খামার নামে ১০ শতক কৃষিজমিতে ১১০ ফিট লম্বা ৪০ ফিট চওড়া একটি ঘরে মাশরুম চাষ করছেন ইন্দ্রজিত। তার খামারে প্রতিদিন ১০-১২ জন মহিলা কাজ করছে। তারা সবাই মাদার, কাঠের গুড়ার স্পন, খড়ের সিলিন্ডার প্যাকেট তৈরির কাজে ব্যস্ত। ঘরের মধ্যে টানিয়েছেন শক্ত কটের সুতা দিয়ে বানানো শিকা। সেখানে স্তরে স্তরে ঝুলে আছে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো মাশরুম বীজ প্যাকেট বা স্পন প্যাকেট। ওয়েস্টারও মিল্কি জাতের মাশরুম দেখা যায় সেখানে। ওয়েস্টার মাশরুম প্রতি কেজি ২০০-২৫০ টাকা, মিল্কি মাশরুম ৩৫০-৪৫০ টাকায় বিক্রি করছেন বাজারে। বর্তমানে তাদের খামারে ১০ হাজার সিলিন্ডার প্যাকেট রয়েছে। উদ্যোক্তা ইন্দ্রজিত কুমার জানান, ইউটিউবে কীভাবে মাশরুম চাষ করা হয় তা দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। প্রথমে মাগুরা ড্রিম মাশরুম সেন্টার থেকে ৪ দিনের প্রশিক্ষণ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে সাভার জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে ৩ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করেন। গেল বছরেও ১০ টন মাশরুম উৎপাদন করেন তিনি। ২০২১ সালে শুরু করা এই মাশরুম চাষে মাত্র ৪ বছরে তিনি দেখেছেন সফলতার মুখ। সরকারি সহায়তা কিংবা স্বল্প সুদে ঋণ পেলে ব্যবসা আরো বড় করতে পারবেন তিনি। বাড়বে মাশরুম উৎপাদন। সে ক্ষেত্রে আরো বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতো তার প্রতিষ্ঠানে। বেকারত্ব কমাতে ভূমিকা রাখতে রাখতে পারবেন বলে জানান তিনি।

শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বলেন, উদ্যোক্তা ইন্দ্রজিতকে আমরা আরও ভালোমতো প্রশিক্ষণ দেব। এরই মধ্যে তিনি বেশ কিছু উদ্যোক্তাও তৈরি করেছেন। তাদেরও প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। উপজেলা মাসিক মিটিংয়ে তাকে ঋণ দেয়ার ব্যাপারটি উত্থাপন করা হয়েছে। আশা করি স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ঋণ পাবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত