রংপুরে বদরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন ২০ জন। গতকাল শনিবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার শহিদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লাবলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
এসময় জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থক মোন্নাফ, কাঁচাবাড়ি এলাকার মিতু মিয়া, একই এলাকার মৃত আফসার আলীর ছেলে শফিকুল, মধুপুর কালজানি এলাকার লাবলু মিয়া, কাঁচাবাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে জয়নাল, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মুন্না ও মংলু গুরুতর আহত হলে তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে গ্লোবাল টেলিভিশনের রংপুর জেলা প্রতিনিধি নুরুন্নবী নুরু, মাছরাঙা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফুয়াদ হোসেন বাংলাভিশনের ক্যামেরা ভার্সন সাইফুল ইসলাম মুকুলসহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থকরা।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী জানান, কে বা কারা কার দোকানে হামলা ভাঙচুর করেছে এ বিষয় নিয়ে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন ফেসবুকে আমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস ও বক্তব্য দিয়ে আমার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন হামলা চালিয়ে আমার লোকজনকে আহত করে এ বিষয়ে বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কালুপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক জানান, গত পরশু দিন বিনা কারণে বদরগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবসায়ী জাইদুল হকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ভাঙচুর করেন। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার জাহানসহ আমরা বাধা দিতে গেলে মোহাম্মদ আলীর লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর ও হামলার প্রতিবাদে সব ব্যবসায়ী মিলে মানববন্ধনের আয়োজন করি এসময় মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমাদের ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্য সচিব কমল লোহারি জানান, এটা দলীয় কোনো দ্বন্দ্ব নয়। মোহাম্মদ আলী সরকার ও মানিক চেয়ারম্যান তারা আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তেন। তারই প্রতিফলন আজকের এই সংঘর্ষ।
বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম আতিক জানান, বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমরা মাঠে রয়েছি। এদিকে সংঘর্ষের পর বিএনপির ওই দুই নেতাসহ বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবীর মানিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু। দখলদারত্ব ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে তাদের।
এ বিষয়ে যৌথ বাহিনীর ক্যাপ্টেন মেহেদী জানান, বদরগঞ্জ থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এরইমধ্যে ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। আশা করি আর কোনো ঘটনা ঘটবে না।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান- লাবলু মিয়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জানান, লাবলু মিয়ার দলীয় পরিচয় এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়।