সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী নুরান ফাতেমার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ দম্পতির ৬৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৭২২ কোটি ৯১ লাখ ৭৫ হাজার ১২১ টাকা লেনদেনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান। গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর আত্মগোপনে চলে যান চট্টগ্রাম- ৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ। গত ১৬ জানুয়ারি হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরান ফাতেমা, মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদসহ তাদের ছয়টি কোম্পানির নামে থাকা মোট ৮১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। এসব বিষয়ে গতকাল রোববার আবদুল মোমেন বলেন, হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এক কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৮ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি নিজ, যৌথ ও প্রতিষ্ঠানের নামে ৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ একটি মামলা দায়ের করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক কমলেশ মণ্ডল। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ে সম্পৃক্ত থাকার অপরাধ, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে এর রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) (৩) ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী নুরান ফাতেমাকে আসামি করা হয়েছে। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আল-আমিন। আসামি নুরান ফাতেমার বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি নিজ, যৌথ ও প্রতিষ্ঠানের নামে ৫৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকার সন্দেজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছ। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) (৩) ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।