ফরিদপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহতরা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত ৩৫ জনের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহতরা হলেন- ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের শেখরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা জোয়ার সরদার, তার ছেলে ইমান সরদার, নগরকান্দার কাঠিয়া বড়গ্রামের বাসিন্দা রাজীব খানের স্ত্রী দীপা খান, ফরিদপুর সদরের চর চাঁদপুর গ্রামের বলরাম সরকারের স্ত্রী ভারতি সরকার, চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীটেক গ্রামের বাসিন্দা খালেক চৌধুরীর ছেলে আলম চৌধুরী, ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লার বাসিন্দা লতিফ ব্যাপারির স্ত্রী ফজিরন নেসা এবং লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের জহিরউদ্দিনের ছেলে আজিবরউদ্দিন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের জেলা সদরের বাখুন্ডা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুকসুদপুর থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ফারাবি পরিবহন নামে একটি লোকাল বাস বাখুন্ডা এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে খাদে পড়ে যায় এবং উক্ত দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় বিদ্যুতের একটি পিলার প্রায় সাত থেকে আট ফিট বাসের ভেতরে ঢুকে যায়। ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা খবর পেয়ে ৫ জনকে মৃত অবস্থায় এবং বাকিদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করি। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় এবং আহতদের মধ্যে দুইজন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ আনার পরে মৃত্যু হয়েছে। ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান, গাড়িটি দ্রুত গতির ছিল। একইসঙ্গে আরেকটি দ্রুত গতির কোনো যানকে ওভারটেকিং করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশরাত জাহান বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন বাসের গতি ৮০ কিলোমিটারের বেশি ছিল। চালকের বেপরোয়া গতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সঙ্গে সভা করা হবে। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, নিহত প্রত্যেককে প্রশাসনের উদ্যোগে ২৫ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া পরবর্তিতে বিআরটিএর মাধ্যমে এককালীন অনুদান দেয়া হবে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করবে। পরে তাদের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।