ঢাকা সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গরিবের ‘বাঘ’ বনবিভাগ আঁচ লাগে না অট্টালিকায়

উত্তর ও দক্ষিণ বনবিভাগ
গরিবের ‘বাঘ’ বনবিভাগ আঁচ লাগে না অট্টালিকায়

কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ বনবিভাগের উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকের মতে, অভিযানে বনবিভাগের কর্মকর্তারা ‘গরিবে বাঘে’র ভূমিকা পালন করছেন। গত ক’দিনের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে বনবিভাগ। তবে এসব অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, বেশির ভাগ সময় বনের জমিতে প্রভাবশালীদের অট্টালিকা গড়ে উঠলেও গরিবের ঝুঁপড়ি ঘর তৈরিতে বাঁধা দেয় বনবিভাগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৯ এপ্রিল কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ধোয়াপালং রেঞ্জের খুনিয়াপালং বিটে ঢাকঢোল পিটিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে জবরদখল প্রতিরোধ অভিযান পরিচালিত হয়। ওই অভিযান অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, কিছু ঝুঁপডি ঘর ভেঙে দেয়া হলেও বনের জমিতে গড়ে উঠা বড় বড় অট্রালিকায় কোন ধরনের আঁচ লাগেনি। স্থানীয়দের মতে, বরাবরের মতো বনবিভাগ গরিবের পেটে লাতি মারেন। বনবিভাগ অনেকেটা ‘গরিবের বাঘ’ এর ভূমিকায়। অভিযোগ রয়েছে, গত ৯ এপ্রিল ইনানী রেঞ্জের রাজাপালং বিট এলাকায় বনের জায়গা দখল করে গরুর খামার তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়ে বিশাল ফটোসেশন করেছে বনবিভাগ। অথচ, ইনানী রেঞ্জ এলাকায় হাজারো বড় বড় অট্টালিকা রয়েছে। তা উচ্ছেদে কোনো অগ্রগতি নেই বনবিভাগের। অপরদিকে রাজারকুল রেঞ্জের রাজারকুল বনবিটেও উচ্ছেদের নামে বনবিভাগ দায় সারেন কর্মকর্তারা। ৮ এপ্রিল উখিয়া রেঞ্জের সদর বিটের লম্বাশিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংরক্ষিত বনের জায়গায় নির্মাণাধীন ৫টি স্থায়ী স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়ে জবরদখল মুক্ত করেন। এই অভিযান নিয়েও মাঠেঘাটে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সচেতন মহল ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের বিভিন্ন বনবিটে হাজারো একর বনভূমি বেদখল ও অট্টালিকা গড়ে উঠলেও ঘুম ভাঙছে না সংশ্লিষ্টদের। অন্যদিকে গত ৭ ও ৮ এপ্রিল কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের ফাঁসিয়াখালী বিটের এলাকায় পৃথক দুইটি অভিযান নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সংবাদ কর্মী এম জিয়াবুল হক সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘গরিবের পেটে লাথি’। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট বনবিটের কর্মকর্তা।

অভিযানের প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহরাজ উদ্দীন বলেন, অভিযানের সময় ধনী-গরিব দেখা হয় না। নিয়ম মাফিক অভিযান পরিচালিত হয়। উচ্ছেদ অভিযানে তো কারো না কারো ক্ষতি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন নানা প্রশ্ন তুলে। সেইটা এখন স্বাভাবিক বিষয়। যেই যা বলুক, জবর দখলের ক্ষেত্রে কোন ছাড় নেয় বলে হুশিয়ারী দেয় এই কর্মকর্তা।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ১ লাখ ২০ হাজার ৫৩৪ একরের মধ্যে ৮ হাজার ২০৩ একর বেদখলে রয়েছে। গেল ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে ২৫.৩১ একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মারুফ হোসেন বলেন, দপ্তরটির আওতায় মোট বনভূমির পরিমাণ ৮৯ হাজার ৭৯১ একর। এর মধ্যে বেদখলে থাকা ১৫ হাজার ৭৮৩ একর বনভূমি উদ্ধারে উচ্ছেদ প্রস্তাব জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত