ওয়াকফ আইন সংশোধন ঘিরে থমথমে পশ্চিমবঙ্গ, গ্রেপ্তার ১৫০

প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ এবং পরবর্তী সহিংসতায় এখনও থমথমে কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গ। এরইমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মুর্শিদাবাদে মোতায়েন করা হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। রাজ্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে স্পর্শকাতর এলাকায় টহল দিচ্ছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব কথা বলেন রাজ্য মুখ্যসচিব ও ডিজির সঙ্গে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন গোবিন্দ মোহন।

বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। পরিস্থিতির ওপর রাজ্য প্রশাসন করা নজর রাখছে। এরইমধ্যে ১৫০ জনের বেশি ব্যক্তিকে এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও বিএসএফের সহযোগিতা নিয়েছে রাজ্য।

আগেই স্থানীয় ৩০০ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে এবং রাজ্যের অনুরোধে পাঁচ কোম্পানি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে স্পর্শকাতর এলাকায়। ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন বলেন, পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে কেন্দ্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্যকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন হলে তাও পাঠাতে প্রস্তুত আমরা।

গতকাল রোববার সকাল থেকেই স্পর্শকাতর এলাকাগুলোর অধিকাংশ জায়গায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট সেবা। রাস্তায় লোকজনও বেরিয়েছে খুব কম। ট্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ধুলিয়ান এবং সুতি রেলস্টেশনে বাড়তি রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

কলকাতার স্পর্শকাতর এলাকায় গণপরিবহন চলাচল করলেও তা সংখ্যায় বেশ কম। ১২ নম্বর জাতীয় সড়কেও মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বহিরাগত কেউ যেন সহিংসতার মতো ঘটনা না সৃষ্টি করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। বহিরাগত প্রবেশ ঠেকাতে গঙ্গা নদীর ধারে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকায়গুলো নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।

গত ২ এপ্রিল ভারতের পার্লামেন্টে বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস করা হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরের পর সেটি এরই মধ্যে আইনে পরিণত হয়েছে। এরপর থেকেই নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে।