মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, মুজিবনগর সরকার ছিল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি সাংবিধানিক সরকার। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সুসংগঠিত করেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপন করেছে এ সরকার। গতকাল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আম বাগানে ঐতিহাসিক যে সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল তা আমাদের জন্য এক বীরত্বের অধ্যায়।
তখনকার নির্বাচিত যে নেতৃবৃন্দ ছিলেন, তারাই এ সরকার গঠন করেছেন। ১৭ এপ্রিল ছিল জাতির জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। আমরা গতকালে ফিরে যেতে পারব না। ইতিহাসের ওপর কোনো কিছু আরোপ করা যায় না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত মুজিবনগর দিবসে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মুজিবনগর সরকারের নাম পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছা এ সরকারের নেই। কারণ ইতিহাস কখনও মোছা যায় না। ইতিহাসকে ইতিহাসের জায়গায় রাখতে হয়। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার এসে কী করবে এটি তাদের ব্যাপার।’ তিনি বলেন, আমাদের অনেক গৌরবের বিষয় আছে, যেগুলো আমরা ইচ্ছা করে বিতর্কিত করতে চাই না। ইতিহাস অমোচনীয় থাকা উচিত। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, যারা সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা তারা প্রতিনিয়ত বিব্রতবোধ করছেন। মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও অনেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। এটি গ্লানিকর। এরই মধ্যে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আমরা অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বিভিন্ন রকমের প্রায় দুই হাজার ৭০০’র অধিক মামলা আছে। এই মামলাগুলো নিষ্পত্তির প্রয়োজন আছে। আমরা আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছি। ভোর ৫টা ৪৩ মিনিটে গার্ড অব অনার ও জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীরপ্রতীক। এসময় ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল জাতীয় নেতৃবৃন্দকে গার্ড অব অনার প্রধানকারী দুই আনসার সদস্যকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এরপর উপদেষ্টা মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় এখানে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত জাহান, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ, পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে উপদেষ্টা মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্স ও আম্রকাননের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন।