সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বাঁশ উৎপাদন করে অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন। বাজারে বাঁশের দামও ভালো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলতি মৌসুমে প্রায় ১ লাখ হেক্টর জমিতে বাঁশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষকের আগ্রহে এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি অর্জিত হয়েছে। তবে এ জেলার উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ বাঁশ উৎপাদন বেশি হয়ে থাকে। বাড়ির আঙিনা, পতিত জমি, পুকুরপাড়, ভিটেমাটি এমনকি রাস্তার ধারে পর্যন্ত এ বাঁশ লাগানো হয়ে থাকে। তবে পতিত জমিতে এ জেলার অনেক স্থানে বাঁশ রোপণে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
এ অঞ্চলে বড় বাঁশা, মাকলা, তল্লা, বাঁশনি বাঁশ বেশি দেখা যায়। যমুনার ঘাট এলাকা, হাট বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে এসব বাঁশ বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিটি বাঁশ গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। বিশেষ করে যমুনা নদী দিয়ে প্রতিবছরই বাঁশের ভেলা ভাসিয়ে বাঁশ বিক্রি করতে যায় বিভিন্ন মাজারের ওরস শরীফে। এছাড়া ছোটখাট ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজেও এ বাঁশ ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে গ্রামঞ্চলে এসব বাঁশের ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে এবং দিন দিন বাঁশের চাহিদা ও দামও বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, এসব বিভিন্ন বাঁশের ছোপ ও বাগান থেকে বাঁশের চারা সংগ্রহ করে সারাবছরই উল্লেখিত পরিত্যক্ত জমি ও স্থানগুলোতে বাগান হিসেবে লাগানো হয়ে থাকে। বাগান ও ছোপগুলোতে অল্পদিনের মধ্যেই বাঁশ গজিয়ে ওঠে। এসব পূর্ণাঙ্গ বাঁশ যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানের ঘাটসহ বিভিন্ন হাট বাজারে এ বাঁশ বিক্রি করা হয়। ব্যবসায়ীরা পাইকারি হারে এসব বাঁশ ক্রয় করে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে। কৃষকের চেয়ে তারাই বেশি মুনাফা অর্জন করছে। লাভজনক বাঁশ বাগান করতে খরচ একেবারেই কম হওয়ায় আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষক। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুল জব্বার মোহাম্মদ আহসান শহীদ সরকার বলেন, এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১ লাখ হেক্টর জমিতে এসব বাঁশ চাষ হয়েছে। খরচ কম, লাভজনক এ বাঁশ চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে এবং এসব বিভিন্ন প্রজাতের বাঁশের দাম বাজারে ভালো থাকায় কৃষকরা খুশি বলে উল্লেখ করেন তিনি।