ঢাকা শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

ভুট্টার আবাদ বাড়ছে

ভুট্টার আবাদ বাড়ছে

ভুট্টাচাষে উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রম কম এবং ফলন বেশি পাওয়া যায়। সেইসঙ্গে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে সরকারি প্রণোদনা ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। এতে প্রতি বছরই নওগাঁয় ভুট্টাচাষে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বেড়েছে। এ বছর ভুট্টার ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ার আশা চাষিদের। বিভিন্ন মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে ভুট্টার আবাদ। সবুজ পাতার আড়ালে লুকিয়ে আছে ভুট্টার কাদি। কিছুদিনের মধ্যে পরিপুষ্ট দানায় পরিণত হবে। আবার কোথাও দেরিতে রোপণ করা ভুট্টার জমিতে পানি সেচ ও পরিচর্যা করছে কৃষক। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৪৫০ হেক্টর জমিতে বেড়েছে ভুট্টার আবাদ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ৭ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। যা থেকে ৯৪ হাজার টন উৎপাদনের আশা। প্রতিমণ ১১০০ টাকা হিসাবে যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫৮ কোটি টাকার বেশি। কৃষকরা জানান, ধান ও আলুসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টাচাষে খরচ ও পরিশ্রম কম, ফলন বেশি এবং রোগবালাইয়ের তেমন ঝুঁকি নেই বললেই চলে। এছাড়া সারা বছর ভালো দাম পাওয়া যায়। লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসল কমিয়ে এখন ভুট্টার আবাদে ঝুঁকছেন তারা। ভুট্টা শুধু মানবখাদ্য হিসেবে নয়, এটা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া উদ্বৃদ্ধ ফসল বিক্রি করে পরবর্তীতে অন্য ফসল উৎপাদেন ব্যয় করা হয়। এতে বাড়তি টাকা পকেট থেকে খরচ করতে হয় না। জেলার মান্দা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক খাইরুল ইসলাম। দিনমজুর এ কৃষকের নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ভুট্টা চাষাবাদ করেন। কৃষক খাইরুল ইসলাম বলেন- এই জমিতে আগে সরিষা ও তিলের আবাদ করা হতো। কিন্তু সেসব ফসল ভালো হতো না। আর আগে কখনো ভুট্টার আবাদ করা হয়নি। প্রতিবেশীর দেখে এবার এক বিঘা জমিতে উন্নতজাতের আবাদ করা হয়েছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা উৎপাদন খরচ কম ও ফলনও বেশি হয়। জমি চাষাবাদ, বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ, রোপণ, শ্রমিক ও কাটা-মাড়াইসহ খরচ পড়ে বিঘাপ্রতি অন্তত ১৪ হাজার টাকা। যেখানে ফলন পাওয়ার আশা অন্তত ৪০-৪৫ মণ। ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হওয়ার আশা।

মৈনম গ্রামে কৃষক আজাহার বলেন, ১০ কাঠা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। এবার অনেক কৃষক ভুট্টা আবাদ করেছে। ফলন যদি ভালো পাওয়া যায় আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে আবাদ করব।

জেলার রানীনগর উপজেলায় মিরাট গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান বলেন, ভুট্টার আবাদে তেমন ঝুঁকি ঝামেলা থাকে না। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছ ভালো হয়েছে। আশা করছি, ফলন ভালো হবে এবং দামও পাওয়া যাবে।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন- ভুট্টা মাঝারি উঁচু ও উঁচু জমিতে চাষাবাদ হয়ে থাকে। চাষিরা উন্নতজাতের সানসাইন, সুপারসাইন, তাজমেরি ও মিরাক্কেল জাতের ভুট্টার আবাদ করেছে। এ বছর ১ হাজার ৩০০ জন কৃষককে বীজ ও সার প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত