ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আজ শুরু হচ্ছে সি-ট্রাকের বাণিজ্যিক যাত্রা

আজ শুরু হচ্ছে সি-ট্রাকের বাণিজ্যিক যাত্রা

আজ বৃহস্পতিবার বাণিজ্যিক আকারে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ-রুটে সি-ট্রাক চলাচল শুরু হবে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর জেটিঘাট থেকে ‘এমটি ভাষা শহীদ জব্বার’ নামের সি-ট্রাকটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, কক্সবাজার থেকে মহেশখালী রুটে প্রতিদিন তিনটি ট্রিপে ২৫০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সি-ট্রাকটি চলাচল করবে। ভাড়ার বিষয়ে জানানো হয়, ৬ নম্বর ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে একজন যাত্রীর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। আর নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে জনপ্রতি ভাড়া হবে ৪০ টাকা। মহেশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই সেবা চালু হওয়ায় দ্বীপজুড়ে আনন্দ বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা মনে করছেন, এতে বর্ষাকালে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমবে। তবে সরকারি সেবার আওতায় পরিচালিত সি-ট্রাকের ভাড়া কিছুটা বেশি বলে মনে করছেন অনেকেই। কোস্ট ফাউন্ডেশনের মহেশখালী অঞ্চলের কর্মকর্তা অধ্যাপক মকবুল আহমদ জানান, সরকারি গেজেট অনুযায়ী নৌপথে যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে ভাড়া নির্ধারণ আছে ২ টাকা ৮৫ পয়সা। মহেশখালী-কক্সবাজার রুটের দৈর্ঘ্য ৮.৫ কিলোমিটার, এতে সর্বনিম্ন ভাড়া ৩০ টাকা হওয়া উচিত। অথচ, এখানে ৪০-৫০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, যা যৌক্তিক নয়। মহেশখালী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনও ভাড়া পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ কক্সবাজার (কস্তুরাঘাট) নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, যাত্রীদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তিনি জানান, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা, দুপুর ১২টা ও সন্ধ্যা ৬টায় সি-ট্রাক ছাড়বে। মহেশখালী থেকে ছাড়বে সকাল সাড়ে ৭টা, বেলা ১১টা ও বিকাল ৫টায়। মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হেদায়েত উল্যাহ বলেন, যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে মহেশখালী জেটিঘাটে সিসিক্যামেরা স্থাপন এবং যাত্রীছাউনিতে বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, এতদিন কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে যাত্রীরা কাঠের নৌকা, স্পিডবোট ও ডেনিস বোট ব্যবহার করতেন। সি-ট্রাক চালু হওয়ায় যাত্রা হবে আরও নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক। একই সঙ্গে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। গত ১৮ এপ্রিল মহেশখালী-কক্সবাজার নৌরুটে পরীক্ষামূলক সি-ট্রাক চালু শুরু হয়। অপরদিকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া নৌরুটে ফেরি চালু করার দাবিটি জোরালো হচ্ছে দিন দিন। ফেরি চালুর দাবিতে আগামী ২৯ এপ্রিল নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দ্বীপের মানুষ। ফেরি সার্ভিস চালু ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে ?রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়ার চিন্তা করছেন দ্বীপের সচেতন মহল।

উপজেলা থেকে ১ হাজার এবং চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অবস্থানরত আরও ১ হাজার মানুষ ঢাকায় কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আ ন ম শাহিদ উদ্দিন ছোটন বলেন, অবহেলিত কুতুবদিয়ার চারিদিকে টেকসই বেড়িবাঁধ ও পারাপারের জন্য ফেরি সার্ভিস চালুর দাবিতে অন্তত ১ হাজার মানুষ টানা ৩-৪ দিন ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত দ্বীপে ফিরে না যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে, ঢাকায় অবস্থানকালীন কুতুবদিয়ার বাসিন্দাদের থাকাণ্ডখাওয়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আদিল চৌধুরী। ?তিনি বলেন, আমি ঢাকায় অবস্থানকালীন ১ হাজার মানুষের খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করব। উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী বলেন, নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হবে এবং দীর্ঘদিনের অবহেলিত সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধান মিলবে বলে আশা করছি।

মূলত পার্শ্ববর্তী দ্বীপ মহেশখালীতে সি-ট্রাক উদ্বোধনের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কুতুবদিয়া দ্বীপের সচেতন মানুষ টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও ফেরি স্থাপনের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। তাদের দাবির পাশাপাশি দুটি দ্বীপ একই সংসদীয় আসনের হওয়ার পরেও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন কুতুবদিয়া দ্বীপের জনগণ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত