রাঙামাটিতে অপহৃত তিন ইটভাটা শ্রমিক পাঁচ দিন পর উদ্ধার
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
রাঙামাটির কাউখালীতে সশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাতে অপহরণের শিকার তিনজন ইটভাটা শ্রমিককে পাঁচ দিন পর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। সোমবার ভোরে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় শ্রমিক জিয়াউর রহমান (২৮), আহসান উল্লাহ (২৯) ও মো. মোসলেম উদ্দিনকে (৪০) উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারূফ আহম্মেদ। গত বুধবার মধ্যরাতে রাঙামাটির কাউখালীর কলমপতি ইউনিয়নের তারাবুনিয়ার খাঁজা গরীবে নেওয়াজ ইটভাটা থেকে এই তিন শ্রমিককে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায় সশস্ত্র অস্ত্রধারী উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা।
এ বিষয়ে সোমবার বিকালে রাঙামাটির পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপরোক্ত তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের দুর্গম ডাবুন্যাছড়ি ও আশপাশের বিস্তৃৃত এলাকায় পুলিশের টানা অভিযানের মুখে টিকতে না পেরে অপহরণকারীরা অপহৃতদের হাটহাজারীর সীমান্তবর্তী এলাকায় ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযানে থাকা কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে কাউখালী থানা পুলিশের একটি দল তাদের কাউখালীতে নিয়ে আসে।
কাউখালী থানার ওসি মো. পারভেজ আলী জানান, অপহরণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুইজন পাহাড়ি সন্ত্রাসীকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর রাত ১০টায় কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকা থেকে মুক্তিপণের অগ্রিম ৫ লাখ টাকা গ্রহণকালে দুইজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের আদালতে পাঠিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃতরা ডাব্বুনিয়া এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাবু মারমার হেফাজতে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভোরে ওসি পারভেজ আলীর নির্দেশনায় ও ওসি (তদন্ত) মো. আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে পুলিশের ৫টি টিম বিভক্ত হয়ে কাউখালীর ডাব্বুনিয়া এলাকার সম্ভাব্য স্থানটি ঘিরে ফেলে। পুলিশের সবকটি টিম একত্রিত হয়ে দুর্গম ডাব্বুনিয়া ছড়া পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে।
পুলিশের অভিযান নিশ্চিত জেনে সন্ত্রাসীরা অপহৃতদের কাউখালীর রাউজানের রাবার বাগান এলাকায় ফেলে চলে যায়। পরে অপহৃতরা রাউজান হয়ে হাটহাজারীর থানার ফতেয়াবাদ এলাকায় ইটভাটা মালিক আলমগীর কোম্পানির সন্ধানে যায়।
অভিযানে থাকা পুলিশ খবর জানার পর তাৎক্ষণিক ফতেয়াবাদ এলাকায় গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরে তাদের কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাঙামাটিতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।