বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বিরল প্রজাতির একটি নীলগাই হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি’র ঢাকা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুরে বন অধিদপ্তরের অধীনস্থ বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারীর কাছে নীলগাইটি হস্তান্তর করেন। এ সময় বিজিবির পরিচালক (ভেটেরিনারি) আ ন ম আশরাফুল আলম মণ্ডলসহ বিজিবির কর্মকর্তা এবং বন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর বিজিবির রহনপুর ব্যাটালিয়নের (৫৯ বিজিবি) সোনামসজিদ বিওপির টহলদল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দাইপুকুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী হাউসনগর এলাকা থেকে আহত অবস্থায় বর্ণিত নীলগাইটি উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করার কারণে নীলগাইটির শরীরে মারাত্মক জখম হয় এবং দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকায় অত্যন্ত দুর্বল ও মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে প্রাণীটিকে উদ্ধার করে বিজিবির তত্ত্বাবধানে ২ মাস ৮ দিন ধরে নিজস্ব ভেটেরিনারি ডাক্তার কর্তৃক সুচিকিৎসা প্রদান, প্রয়োজনীয় খাবার ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে অত্যন্ত নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ ও সুঠাম দেহের অধিকারী করে তোলা হয়। বিরল প্রজাতির এই প্রাণীটিকে জাতীয়ভাবে সংরক্ষণের জন্য গতকাল বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হলো।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের কান্তিভিটা এলাকায় স্থানীয়দের নির্মমতার শিকার মৃতপ্রায় একটি পুরুষ নীলগাই উদ্ধার করে বিজিবি সদস্যরা বিওপিতে নিয়ে আসে এবং সুদীর্ঘ চিকিৎসা ও নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে বিরল এ প্রাণীটিকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলে। এছাড়া ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি দিনাজপুর ব্যাটালিয়নের বৈরচূনা বিওপির টহলদল আহত অবস্থায় আরও একটি নীলগাই উদ্ধার করে চিকিৎসা প্রদান ও নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে সেটিকেও সুস্থ করে তোলে। পরবর্তীতে নীলগাই দুটিকে ঢাকায় এনে পিলখানাস্থ অভয়ারণ্যে সবুজ প্রকৃতিতে আশ্রয় প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, বিজিবি সবসময়ই প্রাণিকল্যাণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং প্রাণী সংরক্ষণে অত্যন্ত যত্নবান। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সীমান্ত দিয়ে পাচারকালে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বিজিবি কর্তৃক নিয়মিত বন বিভাগে হস্তান্তর এবং অবমুক্ত করা হচ্ছে। ঢাকাস্থ পিলখানা বিজিবি সদর দপ্তরে গাছের সুশীতল ছায়াতলে সবুজ প্রকৃতির মধ্যে সুবিস্তৃত এলাকা নিয়ে পশু-পাখিদের জন্য একটি অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা হয়েছে যেখানে অনেক বিরল প্রজাতির পশু-পাখি নিবিড় মমতায় বিচরণ করছে।
