চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থাপন করা স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সেন্টারে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত শনিবার সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ করা হয়। গতকাল রোববারও সে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন রোগীর স্বজনরা। রোববার সকাল ১০টায় ডায়ালাইসিস সেন্টারের সামনে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে অংশ নেয়া হাফিজ বলেন, আমি ২০২০ সাল থেকে ডায়ালাইসিস চিকিৎসা নিচ্ছি। তখন এক ডায়ালাইসিসে খরচ পড়ত ৪৮৬ টাকা। তা বছরে ৫ শতাংশ বেড়ে বেড়ে ২০২২ সালে হয় ৫৩০ টাকা। কিন্তু এ বছর তা বেড়ে প্রায় ৩ হাজারের মতো হয়েছে। আগে আমার এক মাসে খরচ হতো ৪ হাজার ৮০ টাকা। কিন্তু তা এখন বেড়ে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা হয়েছে। আমার পক্ষে এত টাকা খরচ করা সম্ভব নয়। ফি না কমালে বিনা চিকিৎসায় মারা যাব। আমি আগের ফি বহালের দাবি জানাই।
রোকসানা নামের আরেক জন নারী বলেন, আমরা এখানে টাকা দিয়ে চিকিৎসা করতে আসি। কিন্তু এখানে কর্মরত নার্স, ডাক্তার, অন্যান্য কর্মীরা আামদের সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করেন তা মেনে নেয়া যায় না। আমরা ফি কমানোর সঙ্গে সঙ্গে ভালো ব্যবহার পেতে চাই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারিভাবে প্রতি ডায়ালাইসিস সেশনে গত বছর নিয়মিত ফি ছিল ২ হাজার ৭৯০ টাকা। আর সরকারি ভর্তুকি প্রদত্ত সুবিধায় সেশনপ্রতি ৫১০ টাকায় সেবা গ্রহণের সুযোগ পেতেন গরিব ও অসহায় রোগীরা। এর বাইরে মুক্তিযোদ্ধা ও অতি দরিদ্র কিছু রোগী ফ্রিতে এ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
যদিও ফ্রি সেশনের সংখ্যা খুবই কম। সারা বছর সাড়ে ছয়শ’ সেশন ফ্রির সুবিধা প্রদানের সুযোগ রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের । তবে সেশনপ্রতি নির্ধারিত এ ফি বছরে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়। পিপিপির (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় সরকার ও স্যান্ডরের করা চুক্তিতে ফি বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করা আছে। সে হিসেবে ভর্তুকি প্রদত্ত সেশনপ্রতি ফি গত বছরের ৫১০ টাকার স্থলে এবার ৫৩০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। আর বেসরকারি ফি ২ হাজার ৭৯০ টাকার স্থলে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩০ টাকা।
এর আগে, কম ফির সুবিধায় যারা ডায়ালাইসিস সেবা পাবেন, তাদের শিডিউল দেয়ার কথা ছিল গত শনিবার। এই শিডিউল নিতেই ডায়ালাইসিসের রোগী ও তাদের স্বজনরা গত শনিবার হাসপাতাল পরিচালকের কার্যালয়ে আসেন। সেখানে ফি বৃদ্ধির বিষয়টি নজরে আসার পর তারা বিক্ষোভ করেন। গতকাল রোববার দ্বিতীয়বার বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন তারা।
এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, এই ফি তো চমেক বাড়িয়ে দেয়নি। এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে। সেই চুক্তি মোতাবেক বছরে ৫ শতাংশ বাড়ে। বাড়তি ফি এভাবে বেড়েছে। এখানে হাসপাতালের কোনো এখতিয়ার নেই।
