রংপুর অঞ্চলে স্বস্তির রোদ

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে গত দুই সপ্তাহ ধরে চলা তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় স্থবির জনজীবনে স্বস্তির রোদ দেখা দিয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে রংপুর ও তার আশপাশের এলাকাগুলোতে ঝলমলে রোদ দেখা গেছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে রংপুর অঞ্চলে রোদের দেখা মিলছিল না। সেই সঙ্গে বইছিল হিমেল বাতাস। কোনো কোনো দিন দুপুরের পর ঘন কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঁকি দিলেও রোদের তাপ ছিল না। সেই দৃশ্য পাল্টিয়ে গতকাল সকাল থেকে পূর্ব আকাশে ঝলমলে সূর্য দেখা দেয়। রংপুর আবহাওয়া কার‌্যালয়ের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গতকাল সোমবার সকালে রংপুরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রোববার ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে, রোদ উঠলেও রোববার থেকে তাপমাত্রা কমেছে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে রোদ পোহাচ্ছেন অনেকে। অনেক দিন পর এমন প্রাকৃতিক উষ্ণতায় স্বস্তি ফিরে এসেছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, খেটে খাওয়া মানুষসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে। সকাল সকাল মাঠে কাজ করতে গেছেন শ্রমজীবীরা। দুপুরে পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের কান্দির বাজারের এক বৃদ্ধ দোকানিকে রোদের উষ্ণতা নিতে দেখা যায়। তিনি বলেন, গত ১৫/২০ দিন ধরে চলা ঠান্ডায় মনে হচ্ছিল জীবনটা যায় যায়। ঠাণ্ডায় কিছুই করতে পারিনি। ব্যবসা-বাণিজ্যও ভালো চলছে না। শীতের কারণে লোকজন হাটবাজারে কম আসছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা গরিব মানুষ, কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ঠান্ডায় কোনো শীতবস্ত্র পাইনি। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেক কষ্টে আছি।

আরেক বৃদ্ধ প্রশান্ত কুমার মিশ্র বলেন, এরকম ঠান্ডা থাকলে বেঁচে থাকা আর সম্ভব হবে না। রোদ না থাকায় ময়লা কাপড় চোপড় ব্যবহার করছি। এ কারণে শরীরে চর্ম রোগ দেখা দিয়েছে। তবে আজ সোমবার রোদ ওঠায় বাড়ির লোকজন কিছু কাপড় পরিষ্কারের ব্যবস্থা করেছে।

আজিজুল হক নামে এক দিনমজুর বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে একদিনও কাজে যাতে পারিনি। অনেক কষ্টে দিন যাচ্ছে। ঠান্ডার মধ্যে কষ্ট করে বাইরে বের হলেও কাজ ছিল না। সকালের রোদ দেখে কাজে যোগ দিয়েছি। দিনটি ভালোই যাচ্ছে। রোদ থাকায় কোনো কষ্ট লাগছে না। এদিকে সোমবার সকাল থেকে রংপুর নগরীর ধাপ, শাপলা চত্বর, কেরানীপাড়া চারমাথা মোড়, শিমুলবাগ, বেতপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রম বেচাকেনার স্থানে শ্রমজীবী মানুষের উপস্থিতিও কয়েকগুণ বেড়েছে। কাজের সন্ধানে ছুটে আসা লোকরা জানান, ঠান্ডা বাতাসের কারণে কাজ করা সম্ভব হয় না। এ কারণে কয়েক দিন ধরে শ্রমিকের সংখ্যা অনেক কম ছিল। কিন্তু রোদ ওঠায় শীত কিছুটা কমেছে ও স্বস্থি ফিরেছে।