রামপালসহ দেশের চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে জাতীয় গ্রিডে। এতে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে সিলেটেও। এ অবস্থায় গত সোমবার থেকে সিলেটেও শুরু হয়েছে লোডশেডিং।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে বাগেরহাটের রামপাল ও ভোলার নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রে সোমবার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। গত ২২ ডিসেম্বর থেকে ‘মাইনর মেইনটেন্যান্স’ কাজের জন্য পায়রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ আছে। ৭ জানুয়ারি থেকে ভেড়ামারা কেন্দ্র সংরক্ষণ কাজের জন্য বন্ধ রয়েছে। এতে জাতীয় গ্রিডে প্রায় ১ হাজার ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে এর প্রভাবে শীত মৌসুমেও সিলেটে চলছে লোডশেডিং।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ সিলেটের তথ্য মতে, সোমবার রাত ৩টার দিকে রামপাল ইউনিট-১ রোটর আর্থ ফল্ট দেখিয়ে ট্রিপ করে এবং ভোলা নতুন বিদ্যুতের জিটি-২ ডিপি হাই দেখিয়ে ৬টা ১৯ মিনিটে ট্রিপ করে। এর আগে গত ২২ জানুয়ারি থেকে পায়রা ইউনিট-২ মাইনর মেইনটেনেন্সের কারণে বন্ধ আছে। এছাড়া গত ৭ জানুয়ারি থেকে ভেড়ামারা এইচভিডিসি ব্লক-১ বার্ষিক সংরক্ষণের জন্য বন্ধ আছে। এসব কারণে সর্বমোট জেনারেশন ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫৫০ (রামপাল) + ১১০ (ভোলা নতুন বিদ্যুৎ) + ৪৩০ (এইচভিডিসি) + ৫০০ (পায়রা)= মোট ১ হাজার ৫৯০ মেগাওয়াট। সোমবার থেকেই লোডশেডিং চলমান রয়েছে। ১১ জানুয়ারি লোকশেডিং আরো বেড়েছে। সবাইকে এনএলডিসি থেকে বরাদ্দকৃত লোড কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।
লোডশেডিংয়ের বিষয়ে নগরের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেটে সোমবার থেকে ঘন ঘন লোডশেডিং শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। নতুন করে লোডশেডিং শুরু হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন অফিস-আদালতের কর্মী ও ব্যবসায়ীরা।
নগরের স্টেডিয়াম মার্কেটের আলীকো ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক ব্যক্তি বলেন, সোমবার থেকে কয়েক দফায় লোডশেডিং হয়েছে। মঙ্গলবারও একই অবস্থা ছিল। প্রতিবার অন্তত আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে লোডশেডিং হওয়ায় সময় মতো রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করতে না পারায় ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এক প্রিন্টিং ব্যবসায়ী বলেন, সাধারণত শীতকালে লোডশেডিং কম হলেও সোমবার থেকে দিনে ও রাতে কয়েক দফা লোডশেডিং হয়েছে। এতে গ্রাহকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগে পল্লী বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মিলিয়ে মোট গ্রাহক আছে প্রায় ২২ লাখ। বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা ৩৩০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে বিদ্যুতের সরবরাহ আছে ১৯৮ মেগাওয়াট। এছাড়া জেলার প্রায় ১১ লাখ গ্রাহকের চাহিদা আছে ১১০ মেগাওয়াট। এরমধ্যে মঙ্গলবার সরবরাহ ছিল ৫৭ মেগাওয়াট। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজুলল করীম বলেন, জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ কম থাকায় সারাদেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। সে অনুযায়ী সিলেটেও ঘাটতি আছে। তাই বন্ধ থাকা উৎপাদন কেন্দ্রগুলো চালু হলে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসবে।