ফরমালিনমুক্ত খাদ্য সরবরাহ ও পরিদর্শনের জন্য পার্বত্য মেলার আয়োজন: পার্বত্যমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, সারা দেশের মানুষের কাছে ফরমালিন ও বিষমুক্ত খাদ্য সরবরাহ এবং পরিদর্শনের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানীতে পার্বত্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মন্ত্রী আশ্বস্তের সঙ্গে বলেন, পার্বত্য এলাকার ফল ও খাদ্যদ্রব্য চোখ বন্ধ করে খেতে পারেন। কারণ পার্বত্য এলাকার মানুষ খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন বা বিষ মিশাতে জানে না। পার্বত্য এলাকার মানুষ সরল সোজা। পার্বত্য এলাকার মানুষ খাদ্যকে ভেজাল করতে শেখেনি। এটাই হলো পার্বত্য এলাকার মানুষের বৈশিষ্ট্য। গত বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চার দিনব্যাপী পার্বত্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এসব কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চায় বরাবরই ছিল বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। পার্বত্য মেলার মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তিনি পার্বত্য জেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্যসামগ্রী, হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্য, বিভিন্ন মৌসুমি ফল, ঐতিহ্যবাহী পার্বত্য খাবার যা মেলার আকর্ষণকে অধিকতর বাড়িয়ে তুলেছে। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর প্রচার ও বিপণনের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা এখানে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও সময়োচিত উদ্যোগের কারণেই ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন করা সম্ভব হয়েছিল। ঐতিহাসিক এ চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি অঞ্চলে দীর্ঘ দুই যুগের সংঘাতময় পরিস্থিতির অবসান ঘটে। এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি অব্যাহতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। যার ফলে পার্বত্য অঞ্চলে টেকসই উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।

সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ প্রধান অতিথি হিসেবে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে চার দিনব্যাপী পার্বত্য মেলার উদ্বোধন করেন। পার্বত্যমন্ত্রী পার্বত্য মেলা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগম মেলার উদ্বোধনী স্বাগত বক্তব্য দেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দীপংকর তালুকদার এমপি, মিজ বাসন্তী চাকমা এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী খালিদ এমপি বলেন, পার্বত্য মেলার মাধ্যমে পার্বত্য এলাকার মানুষের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ইতিহাস ঐতিহ্যকে তুলে ধরে পার্বত্য অঞ্চলের জনগণ ও সমতল ভূমির জনগণের মধ্যে এক মেলবন্ধন রচিত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের দীর্ঘদিনের অশান্ত পরিবেশের অবসান হয়।

চারদিন ব্যাপী পার্বত্য মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। পার্বত্য জেলার শিল্পীদের অংশগ্রহণে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। পার্বত্য মেলায় ১০৩টি স্টল বিভিন্ন পণ্য নিয়ে হাজির হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহ, প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের স্টলসমূহ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।