উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা

খুলনায় ৭ হাজার কৃষককে প্রণোদনা

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে স্থানভিত্তিক চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় জেলার ৭ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। ফলে ফসল উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা যায়। এ বছর জেলায় আমন মৌসুমে ২ লাখ ৭৫ হাজার টন ধান উৎপাদন হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন খুলনা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির জানুয়ারি মাসের সভায় এ তথ্য জানান। গত রোববার দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে তার সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা মোতাবেক ১ ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না- এ লক্ষ্যে সরকারের কৃষি দপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, খুলনার উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন পোল্ডারে বন্ধ সøুইসগেট বা খাল সচল রাখলে কৃষিক্ষেত্রে পানি সরবরাহ বাড়বে। এর ফলে কৃষকের ফসল উৎপাদন সহজ হবে।

সভায় সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। গত রোববার থেকে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সি শিশুদের করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য চতুর্থ ডোজ দেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন, সারা দেশে ডেঙ্গুরোগের প্রাদুর্ভাব দৃশ্যমান হচ্ছে। খুলনায় সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু শনাক্তের ব্যবস্থা রয়েছে। খুলনায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে চলমান কর্মযজ্ঞ শেষ হলে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ আরও কমবে বলে আশা করা যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মদ জানান, খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। শীত মৌসুমে চুরির ঘটনা বাড়ার আশঙ্কা থাকে। এ সংশ্লিষ্ট অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী সজাগ রয়েছে। জেলায় চুরি হওয়া ৬৭টি মোবাইল ফোন সেট অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার করে মালিকের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছে। বিগত ডিসেম্বর মাসে জেলায় ২৮০টি নিয়মিত মামলা হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন সময় মতো পেতে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, এজন্য অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তাজুল ইসলাম সভায় জানান, খুলনা জেলায় দুইটি সিএসডি এবং আটটি এলএসডি খাদ্য গুদামে সর্বমোট ৯৯ হাজার টন চাল ও ৫ হাজার ৫১৬ টন গম মজুত আছে। চাহিদার তুলনায় চাল ও গমের মজুত সন্তোষজনক। ভিজিএফ খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ২২২ টন চাল এবং কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচির আওতায় ৮৫ হাজার ৮২৩ টন চাল ও ১৭৬ টন গম বিতরণ করা হয়েছে।

সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে সব দফতরের মধ্যে সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। এ সময় তিনি সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে বিষ দিয়ে মাছ ধরা ও চিংড়িতে অপ্রদ্রব্য পুশ করার মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধে মোবাইলকোর্ট পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিদের্শনা দেন। তিনি বলেন, শব্দ দূষণের কারণে মানুষের মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ দূষণরোধে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পুলক কুমার মন্ডল, বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।