ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় কালোমেঘের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু

ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় কালোমেঘের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের উদ্যোগে গতকাল বুধবার ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় কালোমেঘের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে অনুষ্ঠিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আইয়ুব আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের ডিভিশন প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল আর ট্রায়ালটি উপস্থাপন করেন বিভাগের রেসিডেন্ট ডা. মো. সাবিবর হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসা ক্ষেত্রে গবেষণার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েও সাম্প্রতিক সময়ে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির হেপাটোলজি বিভাগে হেপাটাইটিস বি রোগের নতুন আবিস্কৃত ওষুধ ন্যাসভ্যাকের অধিকতর গবেষণার কাজ চলছে। কোভিডের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইরাসটির ফুল জেনোম সিকুয়েন্সিং করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বাজেটও ৫ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে সম্প্রতি ২০ কোটি টাকায় উন্নিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণায় উৎসাহিত করার জন্য প্রবর্তন করা হয়েছে ভাইস-চ্যান্সেলর পদক। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ জনের অধিক পোস্টগ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক পিএইচডি করছেন। তিনি গবেষণায় অধিকতর মনোনিবেশ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান এবং এ বিষয়ে অগ্রনী ভূমিকা রাখায় হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীলসহ অন্য শিক্ষকদের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল তার মূল প্রবন্ধের জানান, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের ৭৪ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের বিপরীতে প্রতিবেশি ভারত প্রতি বছর আয়ুর্বেদখাত থেকে উপার্জন করছে ৮০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। অথচ আমরা আমাদের এক সময়কার ঐতিহ্যবাহী আয়ুর্বেদ এবং হেকিমী চিকিৎসা শাস্ত্র হারিয়ে যেতে বসেছি। এখনো আমাদের দেশে এই শাস্ত্রগুলোর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জ্ঞান আর এদেশের স্থানীয় হার্বাল ওষুধগুলোকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে ঠিকমত উপস্থাপন করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা নিতে পারবে। বর্তমান পৃথিবীতে যখন পরিবেশ বান্ধব, অর্গানিক খাদ্য ও চিকিৎসার উপর জোর দেয়া হচ্ছে, তখন এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভবনা অত্যন্ত উজ্জল বলে তিনি মনে করেন। এ কারনেই তার ডিভিশনের উদ্যোগে দেশীয় হার্বাল ওষুধগুলো নিয়ে গবেষনা শুরু করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে কার্যকর গবেষনার জন্য তারা এরই মধ্যে জাপানের এহিমি বিশ্ববিদ্যালয় ও ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এ্যাডভান্সড রিসার্চ এন্ড সাইন্সেস, ফার্মেসি অনুষদ ও বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেনোলজি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানী বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী অনুষদ, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ এবং রাজশাহী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাথে গবেষনা কোলাবরেশন গড়ে তুলেছেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগমসহ সিনিয়র শক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এ্যাডভান্সড রিসার্চ এন্ড সাইন্সেসের চিফ সাইন্টিস্ট ড. গাজী নুরুন নাহার সুলতানা ও প্রিন্সিপাল সাইন্টিস্ট ড. জাকির সুলতান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি এবং ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ ও অধ্যাপক ড. শেখ জহির রায়হান এবং বায়োকেমিষ্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রিয়াজুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের চিফ সাইন্টেফিক অফিসার ড. রেজাউল করিম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএ হায়দার, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী ফয়েজ হোসেন ও সহকারী অধ্যাপক ড. রেজিনা আফরিন, রাজশাহী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র সান্টিফিক অফিসার ড. মো. এনায়েত আলী প্রামানিক প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত