না.গঞ্জে সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার শিয়াচর তক্কারমাঠ এলাকায় সড়ক নির্মাণ কাজে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সড়কটির নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট পাথর ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া সড়কটির ঢালাই কাজে আধুনিক রেডিমিক্স মেশিনের পরিবর্তে সনাতন পদ্ধতিতে ঢালাই দেয়া হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে সদর উপজেলা প্রকৌশল অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজের মাধ্যমে এহেন নির্মাণ কাজ চালাচ্ছেন ঠিকাদার যুবলীগ নেতা সানোয়ার হোসেন জুয়েল। এতে করে এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার শিয়াচর তক্কারমাঠ বটতলা সড়ক থেকে শিয়াচর দক্ষিণ সাউথ কমিউনিটি সেন্টার পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়কের আরসিসি ঢালাই নির্মাণ কাজ চলছে। এলজিইডির ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রকল্পে কালভার্ট ও আরসিসি ঢালাই কাজের অনুকূলে ওই সড়কের আরসিসি ঢালাই কাজের নির্মাণ ব্যয় কোটি টাকার উপরে। এই নির্মাণকাজের সাব কন্ট্রাক্টর হিসেবে রয়েছেন ঠিকাদার সানোয়ার হোসেন জুয়েল। তবে সড়কটির ঢালাইকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রকল্পটির ওয়ার্ক অর্ডারে রেডিমিক্স ঢালাইয়ের অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো তোয়াক্কা না করে সনাতন পদ্ধতিতে হাতে ঢালাই করে যাচ্ছে। এছাড়া নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাস্তার দুই পাশের কাটা মাটির মিশ্রিত বালু দিয়ে নিম্নমানের ইট খোয়াসহ নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করছে রাস্তায়। এছাড়া পাথরও নিম্নমানের ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসী অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করলেও এখনো অনিয়মের মাধ্যমে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়েই উক্ত কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সাব কন্টাক্টে কাজ নেয়া ঠিকাদার সানোয়ার হোসেন জুয়েল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মাধ্যমে এলাকায় যতগুলো কাজ হয়েছে সবই নিম্নমানের ইট খোয়া পাথরসহ কম সিমেন্ট ব্যবহার করায় প্রত্যেকটি রাস্তা থেকে পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্পগুলোতে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছু দিনের মধ্যেই রাস্তা ভেঙে সরকারি টাকা জলে যাচ্ছে। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে এসব সড়ক। ফলে সরকারি বরাদ্দে অবমূল্যায়নের ফলে দুর্ভোগের শিকার হতে হয় এলাকাবাসীকে। অপরদিকে রাস্তার দুটি পয়েন্টে আরসিসি বক্সকালভার্ট নির্মাণেও নিম্নমানের পাথর, ইট, খোয়া ও অনুমোদনহীন বালুর ব্যবহার করছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার সানোয়ার হোসেন জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুল আলম সেন্টুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার রঞ্জু জানান, এটা উপজেলা এলজিইডি অফিসের কাজ। তিনি কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি অবগত নন।

সদর উপজেলা এলজিডির উপসহকারী প্রকৌশলী রমজান হোসেন জানান, সড়কটির কিছু অংশ চওড়া করা হয়েছে। এছাড়া সড়কটিতে পুরাতন ইট ও ঢালাই তুলে সেগুলো ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। এটা ওয়ার্ক অর্ডারেও রয়েছে। তিনি আরো বলেন, কিছু অংশ হাতে ঢালাই করা হয়েছে তবে বেশিরভাগ অংশে রেডিমিক্সের মাধ্যমে ঢালাই করা হয়েছে। সড়কটির বাকি যে অংশ ঢালাই অসম্পূর্ণ রয়েছে সেখানেও রেডিমিক্সের মাধ্যমে ঢালাই করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।