নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামে আঁখি আক্তার নামে এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে দুই সন্তানের সামনে হাতুড়ি পেটা করে হত্যা করেছে তার স্বামী। গত বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সাইদুল ইসলাম তার স্ত্রীকে হাতুড়ি পেটা করে পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোঘণা করেন। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ইব্রাহিম প্রধান বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় সাইদুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, আঁখি আক্তার উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ইব্রাহিম প্রধানের মেয়ে। ঘাতক স্বামী সাইদুল ইসলাম পাশ্ববর্তী চেঙ্গাকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। গত ৬ মাস আগে সাইদুল তারই খালাতো ভাই তুহিনকে একটি গ্যারেজে পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। কিছুদিন আগে ওই মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসে।
১৫ বছর আগে সামাজিকভাবে সাইদুল ইসলামের সঙ্গে আঁখি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই ছিল। তাদের অর্ণব (১২), সিয়াম (১০) ও সাইফা (৪ মাস) নামের তিন সন্তান রয়েছে। নানা অজুহাতে সাইদুল ইসলাম প্রায়ই আঁখি আক্তারকে মারধর করত। বৃহস্পতিবার রাতেও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আঁখি আক্তারকে তার স্বামী হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে উপর্যপুরি মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটাতে থাকে। হাতুড়ির আঘাতে আঁখি আক্তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় প্রত্যক্ষদর্শী সন্তানরা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সে পালিয়ে যায়।
গ্রামবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে সাঈদুল তার দুই ছেলের সামনে তার স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করে। বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ তার ঘর থেকে ছেলেদের চিৎকারের শব্দ শুনে গিয়ে দেখি স্ত্রীর হাত-পা বাঁধা। মাথায় বিভিন্ন অংশ থেতলানো ছিল। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আঁখির প্রত্যক্ষদর্শী ছেলে ১২ বছর বয়সি অর্ণব জানায়, রাতে বাবা ও মায়ের ঝগড়া হয়। বিভিন্ন সময়ে বাবা-মা ঝগড়া করে। বৃহস্পতিবার রাতে একপর্যায়ে তার মা’কে তার বাবা হাত-পা বেঁধে ঘরে থাকা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আমারা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এক পর্যায়ে বাবা পালিয়ে যায়। মায়ের হত্যার বিচার চাই।
চেঙ্গাকান্দি গ্রামের আবদুল আউয়াল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবারে কলহ ছিল। এ কলহ থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম বলেন, গৃহবধূ হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে।
