সুন্দরবনের সুপতি স্টেশনে ৩ বাঘের ঘোরাঘুরি, আতঙ্কে বনরক্ষীরা

প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সুন্দরবনের সুপতি স্টেশনের আশপাশ এলাকায় তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার ঘোরাঘুরি করছে। এর ফলে বন অফিসের কর্মরত বনরক্ষীরা অবরুদ্ধ অবস্থায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তারা সতর্ক অবস্থানে থেকে বাঘের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন।

শরণখোলা রেঞ্জের রেঞ্জার সুফল রায় বলেন, গত শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বাঘ তিনটি সুপতি অফিসের পাঁচজনকে একপ্রকার অবরোধ করেই রেখেছিল। গত শনিবার সকালের পর বাঘগুলো একটু দূরে সরে যায়। প্রথমে দুটি বাঘ একসঙ্গে আসে। তারা এসে পুকুর পাড়ে ঘোরাঘুরি করছিল। এক পর্যায়ে আরও একটি বাঘ চলে আসে। এবং তিনটি বাঘ একসঙ্গে বন অফিসের একেবারে সামনে চলে আসে। এ অবস্থায় বনরক্ষীরা অফিস কক্ষে বন্দি হয়ে পড়েন। এর আগে প্রথমে বাঘ দেখে বনরক্ষীরা টিন পিটিয়ে শব্দ করে বাঘগুলোকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু বাঘগুলো টিনের এই শব্দ আমলে না নিয়ে নিজেদের মতো করেই সেখানে অবস্থান নেয় এবং ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তিনি আরও বলেন, নভেম্বর মাস থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাঘের মিলনের সময়। এ সময়ে বাঘ জোড়া বাঁধে। তারা নিরাপদ স্থান খুঁজতে থাকে। তাই বাঘ দেখার পর খবর পেয়ে অফিসের রক্ষীদের ফাঁকা গুলি ছুড়তে নিষেধ করা হয়। মিলনের সময়কালেই পুরুষ ও স্ত্রী বাঘ এক জায়গায় আসে। এছাড়া তারা নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করে থাকে। বন কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি স্টেশনের চান্দেশ্বর এলাকায় তিনটি বাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাঘ তিনটি ওই ফরেস্ট অফিসের আশপাশ দিয়ে ঘুরছে। বনরক্ষীরা দুটি বাঘের ছবিও তুলেছেন। কিন্তু, বাঘের ঘোরাঘুরিতে ওই ফরেস্ট অফিস এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা শামসুল আরেফীন বলেন, এখন বাঘের প্রজনন মৌসুম। তাই সঙ্গীসহ বাঘগুলো নিজের মতো ঘোরাফেরা করছে। তাদের কোনো ক্ষতি না করতে বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চান্দেশ্বর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক বলেন, গত শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে তিনটি বাঘ আমাদের অফিস প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ে। গত শনিবার দুপুর পর্যন্তও বাঘগুলোকে দেখা গেছে। বাঘগুলো দুপুরে অফিসের দক্ষিণ পাশে নদীর তীরে অবস্থান করছিল। তিনি জানান, তারা সতর্ক অবস্থানে থেকে বাঘের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ এলাকায় বাঘের আনাগোনা বেড়েছে। বাঘ জরিপ শেষ হলে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে কি না তা জানা সম্ভব হবে।