মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির (শিফট) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন। এ উপলক্ষ্যে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশের সর্বপ্রথম ফ্রন্টিয়ার প্রযুক্তিভিত্তিক বিশেষায়িত ও ডেডিকেটেড একাডেমিক ইনস্টিটিউশনের মাধ্যমে মাদারীপুরকে আধুনিক ও স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পর এখন আমরা বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে চাই। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণ করতে চাই, যেটা হবে সোনার বাংলার প্রতিরূপ।
তিনি বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। যার চারটি মূল স্তম্ভ হলো- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি। দুর্নীতিমুক্ত জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা প্রণয়ন করে একটি স্মার্ট ইকোনমি তৈরি করা সম্ভব হবে। সরকারের সব কার্যক্রমে পেপারলেস অফিস বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি স্মার্ট গভর্নমেন্ট তৈরি করা হবে। এসবের মাধ্যমে আমরা গঠন করব জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপ এবং প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেধাবীদের প্রস্তুত করার জন্য শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিতে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে সেগুলোর মধ্যে বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি, নিউরোটেকনোলজি, সাইবার সিকিউরিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইন্টারনেট অব রোবোটিক্স থিংস, ব্লক চেইন, ডেটা সায়েন্স, হাইপার অটোমেশন, টেকনোলজিক্যাল এথিক্স, বিহেভিয়ার অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইনোভেশন ও অন্ট্রাপ্রেনরশিপ অন্যতম।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এই অঞ্চলের মানুষ শিক্ষায় অত্যন্ত অনগ্রসর এবং বিদেশমুখী। এ অঞ্চলের তরুণ-তরুণীদের আইটিতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা গেলে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ফলে দেশে থেকেই আমাদের তরুণ-তরুণীরা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ঠিক পাশেই মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় প্রায় ৭০.৩৪ একর জায়গাজুড়ে ‘লার্নিং বাই ডুইং’ বা ‘এক্সপেরিয়েনশিয়াল লার্নিং’ শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে লার্নিং কমিউনিটিভিত্তিক ইনোভেশন কালচার চর্চার পাশাপাশি দেশের প্রথম জিরো ওয়েস্ট ও এনভায়রনমেন্টালি সাস্টেইনেবল ক্যাম্পাস হিসেবে শিফটকে প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ জহুরুল ইসলাম (যুগ্ম সচিব) জানান, ছয়তলা গবেষণা ভবন, চারতলা একাডেমিক ভবন, তিনতলা প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষক-ছাত্রদের জন্য ডরমেটরি ভবন, ছয়টি বিশেষায়িত ল্যাব শিফটের আওতায় নির্মাণাধীন প্রধান অবকাঠামো। শিফটের পরিকল্পনা করা হয়েছে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তিভিত্তিক পুরো বিশ্বের একটি একাডেমিক রোল মডেল হিসেবে। অন্ষ্ঠুানে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।