ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পরীক্ষামূলক চালু সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনাল

পরীক্ষামূলক চালু সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনাল

আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনাল পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত বুধবার দুপুরে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু পরিবহন বাস টার্মিনালের আগমন এলাকায় প্রবেশ করে। যাত্রী নামিয়ে দেয়া ও যথাযথ স্থানে পরিবহন পার্কিংয়ের মহড়ায় অংশ নেয় বাসগুলো। এ কারণে পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ছিলেন উচ্ছ্বসিত। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে এ বাস টার্মিনাল।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, এই বাস টার্মিনালে রয়েছে সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। এটিকে বিশ্বমানের টার্মিনাল হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সিলেটের পরিবহন খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। মেয়র আরিফুল আরও বলেন, সিলেটের পরিবহন সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ টার্মিনালে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং করে বাস টার্মিনালের সেবা বিঘ্নিত না করারও অনুরোধ জানান তিনি। সবাই মিলে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান ও সুবিধা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন তিনি।

সিসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রজেক্ট (এমজিএসপি) প্রকল্পের আওতায় দেশের সর্বাধুনিক সুবিধা সংবলিত ‘কদমতলী বাস টার্মিনাল’ নির্মাণ করেছে সিসিক। এ প্রকল্পে বিমানন্দরের আদলে বহির্গমন, আগমনের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্থাপনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে গোলাকার পাঁচতলা একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়, কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন কার্যালয় স্থাপন করা হবে। প্রধান প্রকৌশলীসহ নির্মাণ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরো টার্মিনালের নির্মাণ কাজ তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে পার্ট-১-এ অবস্থিত ডিপারচার বিল্ডিংয়ের দৈর্ঘ্য সাড়ে ৩০০ ফুট। এই পার্টে ৪৮টি ‘বাস বে’র সঙ্গে রয়েছে ৯৭০ সিটের যাত্রী বসার সুবিধাসম্পন্ন বিশাল হল। রয়েছে ৩০ সিটের ভিআইপি কক্ষ, ৩০টি টিকিট কাউন্টার ও ৫০ জন মুসল্লি ধারণ ক্ষমতার নামাজ কক্ষ। পুরুষ ও মহিলাদের পৃথকসহ প্রতিবন্ধীদের ব্যবহার উপযোগী ৬টি টয়লেট জোন। হুইল চেয়ার নিয়েও যে কেউ টয়লেট ব্যবহার করতে পারবেন। উপরে ওঠার জন্য রয়েছে লিফট এবং খাবারের জন্য রেস্টুরেন্ট ও ফুডকোর্ট। থাকবে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়া যাত্রীর জন্য সিক বেড, দুগ্ধপোষ্য শিশুদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং জোন।

পার্ট-২-এ এরাইভাল বিল্ডিংয়ে একইভাবে প্রায় ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ডিপারচার বিল্ডিংয়ের মতো এখানে রয়েছে বাস বে, যাত্রীর বসার জন্য ৫১০ সিটের ওয়েটিং স্পেস ও ৩০ সিটের ভিআইপি কক্ষ, আধুনিক টয়লেট সুবিধা, সিক বেড, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, লিফট, রেস্টুরেন্টসহ যাত্রীদের সব সুযোগ-সুবিধা। পার্ট-১ ও পার্ট-২-এর মাধ্যমে ডিপারচার ও এরাইভাল আলাদা করা হলেও করিডোরের মাধ্যমে পুরো স্ট্রাকচার একটি সার্কুলার বিল্ডিংয়ে পরিণত হয়েছে। এই বিল্ডিংয়ের পশ্চিম-দক্ষিণ কর্নারে সড়কের সঙ্গে গোলাকার ৫ তলা টাওয়ার বিল্ডিংয়ে রয়েছে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা অফিস। যেখানে থাকবে পুরো টার্মিনালের সিকিউরিটি কন্ট্রোল ও সিসিটিভি মনিটরিং কক্ষ, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন অফিস।

টার্মিনালের পেছনের দিকে পার্ট-৩-এ নির্মিত হয়েছে একটি মাল্টিপারপাস ওয়েলফেয়ার সেন্টার। যেখানে মালিক ও চালক সমিতির জন্য থাকবে ২৪ বেডের বিশ্রাম কক্ষ, গোসলের ব্যবস্থা, অফিস, লকার ব্যবস্থা, ক্যান্টিন এবং মিটিং ও অনুষ্ঠানের জন্য বিশাল মাল্টিপারপাস মিলনায়তন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত