ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মুখে খাওয়ানো হলো কলেরার টিকা

ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মুখে খাওয়ানো হলো কলেরার টিকা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) তত্ত্বাবধানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিস ও আইসিডিডিআর, বি’র বাস্তবায়নে গত সোমবার ভাসানচরে পুনর্বাসিত ৩০ হাজার বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক তথা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মুখে খাওয়ার কলেরার টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এবং আইসিডিডিআর, বি’র ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর ড. ফিরদৌসী কাদরী। এ সময় নোয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, আইসিডিডিআর, বি এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

নোয়াখালী জেলার ভাসানচরে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করা শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৩২ হাজার রোহিঙ্গাকে সেখানে পুনর্বাসন করা হয়েছে। তুলনামূলক উন্নততর পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও আবাসন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ২০২১ সালের জুনে ভাসানচরে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটে। প্রায় ১৫শ’ রোহিঙ্গা আক্রান্ত হয় এবং চারজন মৃত্যুবরণ করে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ভাসানচরে কলেরা টিকাদান কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেয় সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, আইসিডিডিআর, বি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরা। এই উদ্যোগ সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সম্ভাব্য সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় তাদের জন্য আমরা কলেরা টিকার সংস্থান করেছি। আমাদের লক্ষ্য প্রতিরোধক্ষম রোগ থেকে তাদের নিরাপদ রাখা। টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য তিনি আইসিডিডিআর, বি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ড. ফিরদৌসী কাদরী বলেন, ২০১৭ সালে যখন মিয়ানমারের নিপীড়ন এড়াতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় তখন থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ ডোজ কলেরার টিকা দেয়া হয়েছে। এ কারণেই সম্ভাব্য কলেরার বড় রকমের প্রাদুর্ভাব সংঘটিত হয়নি। আমাদের এই সফলতা পৃথিবীর অন্যান্য স্থানেও ছড়িয়ে পড়বে বলে আমি আশাবাদী। ভাসানচরের ২৫টি কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রথম ডোজ কলেরা টিকাদান কার্যক্রম গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে আজ বুধবার পর্যন্ত বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে। ১৯ মার্চে দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কমপক্ষে ১৪ দিন অন্তর প্রদেয় দুই ডোজের দক্ষিণ কোরিয়ার ইউবায়োলোজিক্স কো. লিমিটেডের তৈরি ইউভিকল প্লাস নামের কলেরার টিকা এক বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সিদের দেয়া হচ্ছে। এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত। এক বছরের কম বয়সি শিশু, যারা গত ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনো টিকা গ্রহণ করেছে এবং গর্ভবতী মহিলা ব্যতীত সবাই এ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। টিকা নেয়ার ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনো টিকা নেয়া যাবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত