কুমিল্লা ও সিলেটগামী বাস ২ মে ও চট্টগ্রামগামী বাস জানুয়ারি হতে ঢাকার ভেতর কাউন্টার রাখতে পারবে না : তাপস

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

কুমিল্লা ও সিলেটগামী বাস ২ মে হতে এবং চট্টগ্রামগামী বাস আগামী বছরের জানুয়ারি হতে ঢাকার অভ্যন্তরে কোনো কাউন্টার রাখতে পারবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

গত বুধবার সন্ধ্যায় নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে বাস মালিক শ্রমিক সমিতির সাথে সমন্বয় সভায় ব্যারিস্টার তাপস এ কথা বলেন। সভায় বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো ব্যবহার উপযোগী হওয়ার পরই ঢাকা শহরের অভ্যন্তর হতে বাস কাউন্টার বন্ধ করা, দক্ষিণাঞ্চলের যেসব বাসের রুট পারমিট বন্ধ রয়েছে সেসব বাসের রুট পারমিট দেয়াসহ বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেন।

মালিক শ্রমিক নেতাদের প্রস্তাবনার জবাবে মেয়র বলেন, যে শহরের গণপরিবহণ ব্যবস্থাপনা যত বেশি শৃঙ্খলিত, সে শহর তত বেশি বাসযোগ্য ও আধুনিক। আপনাদের যেসব প্রস্তাবনা রয়েছে, তা যদি পুরোপুরি বিবেচনা করা হয়; তাহলে বিষয়টি দাঁড়ায় যে, দিনশেষে তালগাছ আমার! আমাদের এটা (ঢাকা অভ্যন্তরীণ বাস কাউন্টার বন্ধ) করতেই হবে। টার্মিনালে ঢুকতেই হবে। না হলে গণপরিবহণের শৃঙ্খলা আসবে না। অবশ্যই আমরা অনুধাবন করি যে, বাস্তবতা এটাই- সব একসাথে করা সম্ভব না। এজন্য আমরা পর্যায়ক্রমে, ধীরে ধীরে, ধাপে ধাপে আমরা আগাব।

মেয়র বিভিন্ন পর্যায়ের রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, আজকের সমন্বয় সভায় সামগ্রিক পর্যালোচনা ও সামনের পবিত্র ঈদুল আজহার সময় বিবেচনায় নিয়ে পর্যায়ে আমরা ১ এপ্রিলের পরিবর্তে ২ মে (১ মে ঈদের বন্ধ) থেকে সিলেট ও কুমিল্লাগামী বাসের সব কাউন্টার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে স্থানান্তর করতে হবে। আর আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাঁচপুরের আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ব্যবহার উপযোগী হয়ে যাবে। সেহেতু আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে সেখানে চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লাসহ ওই এলাকার সব জেলার বাস কাউন্টার সেখানে স্থানান্তর করতে হবে। ঢাকার অভ্যন্তরে তখন সেসব এলাকার আর কোনো কাউন্টার রাখা যাবে না।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আসন্ন রমজান মাসে জনগণের দুর্ভোগ যেন না হয় সেটি গুরুত্ব দিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে। রমজান মাসে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমি চাই রমজান মাসে যেন কোনো অভিযান পরিচালনা করতে না হয়।

এছাড়া ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা শহরের যানজট কমাতে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো শহরের বাইরে নিতে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোর সাথে সমন্বয় করে টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ট্রানজিট ওরিন্টেড ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করা হবে। টার্মিনাল নির্মাণের পূর্বে মহাখালী বাস টার্মিনালটি পেছনের অংশে বর্ধিত করে টার্মিনালের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হবে। পেছনে বর্ধিত করলে টার্মিনালের ক্যাপাসিটি বাড়বে। দ্রুতই এটি করা হবে।

সভায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের আধুনিকায়ন করার পর কী কী অনুষঙ্গ থাকছে, তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এ সময় ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহণকে শৃঙ্খলায় নিয়ে আসতে দুই মেয়রের সাথে একযোগে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি, ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙা এমপি ও মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মেহেদী হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।