গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল ১৪ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তেলেগু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের উচ্ছেদের আতঙ্ক হতে অব্যাহতি দানপূর্বক পরিকল্পিত উপায়ে আবাসনের সংস্থান করে কমিশনকে অবহিত করতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশনা দেয়া হয়।
পরবর্তীতে কমিশনের সঙ্গে ঐ সম্প্রদায়ের নাগরিকদের যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। এরই মধ্যে গতকাল বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উক্ত সম্প্রদায়ের নাগরিকদের হুমকির মুখে উচ্ছেদের সংবাদ প্রকাশিত হবার প্রেক্ষিতে কমিশন থেকে পরিচালকের (অভিযোগ ও তদন্ত) নেতৃত্বে আরেকটি প্রতিনিধি দল গতকাল ২ মার্চ পুনরায় ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে দেখা যায় যে, নতুন যে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেখানে মাত্র কয়েকটি ঘর তোলা হয়েছে। কক্ষগুলো এতই ছোট যে, তা ২/৩ জন মানুষের পক্ষে বসবাসের অনুপযোগী। পূর্বের বসবাসের স্থান সোয়ারেজের পানিতে সয়লাব হয়ে যাওয়ার কারণে তা ইতিমধ্যে বসবাসের অনুপযুক্ত হয়েছে। তাদের নিকট হতে জানা যায় যে, মোট ১২৭ টি পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে যার মধ্যে ৭টি পরিবার আদৌ বসবাসের জায়গা পাবে কি না তার কোনো নিশ্চয়তা দেয়া হয়নি। নতুন জায়গায় আবাসস্থল গড়ে তোলার মতো তাদের হাতে পর্যাপ্ত অর্থও নেই। এ নিষ্ঠুর আচরণের ফলে তারা বর্তমানে আশ্রয়, বিদ্যুৎ ও পানিহীন অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় বলা যায় যে, ধলপুরে তেলেগু সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে আশ্রয়, বিদ্যুৎ ও পানিহীন অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এই অসহায়, নিপীড়িত, সমাজ বিচ্ছিন্ন মানুষদের যথাযথ পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করা সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থি ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হলেও সরেজমিন পরিদর্শনে তা পরিলক্ষিত হয়নি। এ অবস্থায়, ধলপুরে বসবাসরত তেলেগু সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য দ্রুত পানি, বিদ্যুৎ, বসবাসের উপযোগী ঘর, পর্যাপ্ত টয়লেট, মাটি ভরাট করে রাস্তা ঘাট নির্মাণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে আহ্বান জানায় কমিশন।
