তৃতীয় দিনেও চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত

খুলনায় সীমাহীন ভোগান্তিতে রোগী

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা মহানগরীর শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। এতে করে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। খুলনা মহানগরীতে প্রাইভেট ক্লিনিকে হামলা ও কর্মরত চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ এনে রোগীর বাবা (পুলিশের এএসআই) গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করবেন।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ঘোষিত খুলনার সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকায় ভেঙে পড়েছে খুলনার পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। জানা গেছে, কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করতে খুলনা এসেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টায় বিএমএ ভবনে চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তারা। সেখানে বিএমএ, ক্লিনিক মালিকসহ চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ডা. নিশাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে গত বুধবার সকাল ৬টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন চিকিৎসকরা। গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) জরুরি সভা শেষে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন সংগঠনের জেলা সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ, রোগী ও তাদের স্বজনরা। বিষয়টি সরকারের উচ্চমহলেও উদ্বেগ তৈরি করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলকে খুলনায় পাঠানো হয়েছে। বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম গতকাল সকালে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল খুলনার পথে। দুপুর আড়াইটার দিকে তারা আমাদের সঙ্গে বিএমএ ভবনে বসবেন। যারাই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়, আমরা তাদের সঙ্গে বসবো। তবে আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতিতে সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাও সেবা পাচ্ছেন না।

যাদের বিরুদ্ধে চিকিৎসক নিশাতের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তারা জানান ভিন্ন কথা। জানা যায়, ওই চিকিৎসক তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা এক শিশুর মাকে কু-প্রস্তাব দেয়ায় তিনি রাজি না হওয়ায় শিশুর অপচিকিৎসা করেন এবং এতে শিশুটি তার বাম হাতের একটি আঙ্গুল হারায়। ওই শিশুর মা (সাতক্ষীরা পুলিশের এএসআই মো. নাঈমুজ্জামানের স্ত্রী) নুসরত আরা ময়না গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানেও তিনি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেয়ার পাশাপাশি সন্তানের চিকিৎসায় অবহেলা এবং তার হাতের আঙুলে পচন ধরার অভিযোগ আনেন। তিনি মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন।