চট্টগ্রাম নগরীতে লেভেল ক্রসিংয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম নগরীর অভ্যন্তরে এবং নগরীর কাছাকাছি দূরত্বের অরক্ষিত রেলওয়ের লেভেল ক্রসিংয়ে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনার দায় নিচ্ছে না কেউ। এতে জীবনহানি ছাড়াও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। সাধারণ লোকজন চলাফেরায় শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। গত ৬ মার্চ নগরীর ইপিজেড থানার এয়ারপোর্ট রোডে বাস উল্টে তিনজন নিহত হন। রাত ৯টার দিকে মেঘনা তেল ট্যাংক লোডিংয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন- রেলকর্মী আজিজুল হক এবং যাত্রী দুজন আসাদুজ্জামান ও মিঠুন কান্তি দে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথসহ নগরীর অভ্যন্তরে এবং নগরীর কাছাকাছি দূরত্বে শতাধিক লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এসব লেভেল ক্রসিংয়ের অর্ধেকের মতো অংশে গেটম্যান আছে। বেশিরভাগ লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান নেই। যেসব ক্রসিংয়ে গেটম্যান আছে সেখানেও দুর্ঘটনার রেকর্ড আছে। গেটম্যানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালন করেন। এতে মাঝে মাঝে দুর্ঘটনা ঘটছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মিরসরাই পর্যন্ত অংশে বহু লেভেল ক্রসিং রয়েছে। যেখানে বছরে একাধিক বড় দুর্ঘটনার রেকর্ড আছে। এসব দুর্ঘটনার জন্য বরাবরের মতো দায়ী করা হয় গেটম্যানদের। রেলওয়ের তদারকির ঘাটতিকেও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।

গেল ৬ মার্চ নগরীর এয়ারপোর্ট সড়কে সামান্য অসতর্কতার কারণে একটি বাস উল্টে যায় ট্রেন ইঞ্জিনের ধাক্কায়। তবে বাসটিকে গেটম্যান সতর্ক করেছিল বলে রেল কর্মকর্তারা জানান। সতর্কতা উপেক্ষা করায় বড় দুর্ঘটনা ঘটে এবং তিনজনের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় লোকজন জানান, এই লেভেল ক্রসিংয়ে প্রায় সময়ই অসতর্ক অবস্থায় ট্রেন-বাস চলাচল করে। প্রায় সময় ঝুঁকি নিয়ে চলে যানবাহনগুলো। বেশিরভাগ সময় অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা মেলে। বড় দুর্ঘটনা হলে লেভেল ক্রসিংটি আলোচনায় আসে। ৬ মার্চের দুর্ঘটনার পর লোকজনের মধ্যে ফের দুর্ঘটনা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। রেলওয়ে ইয়ার্ড মাস্টার আব্দুল মালেক বলেন, দুর্ঘটনার জন্য বাসের চালকের খামখেয়ালিপনাই দায়ী। হঠাৎ বাসটি আমাদের পয়েন্টস ম্যানকে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই আমাদের পয়েন্টস ম্যান মারা যান। এছাড়াও বাস উল্টে আরও দুইজন মারা গেছে।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক নুরুল আলম আশিক বলেন, ইপিজেড থানার এয়ারপোর্র্ট রোডে বাস উল্টে তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। ময়না তদন্তের পর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে ইপিজেড এলাকায় ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় তিনজন নিহতের ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে। ৬ মার্চ রাতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মোহাম্মদ তারেক ইমরানকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ তারেক ইমরান বলেন, ইপিজেড এলাকায় ইঞ্জিনের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় ট্রেনের পয়েন্টস ম্যানসহ তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা তদন্তের কাজ শুরু করেছি। তদন্তে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।