মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সুফল পাচ্ছে না বরিশালবাসী

প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাধীনতার আগে বরিশালে প্রতিষ্ঠিত হয় একটি মুরগি প্রজনন ও খামার উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার ৬৯ বছর অতিবাহিত হলেও এর বৃহৎ সুফল পাচ্ছে না বরিশালবাসী। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সীমাবদ্ধতার মধ্যে সুফল পেলেও বড় খামারিরা এখান থেকে সুবিধা পান না বলে অভিযোগ খামারিদের।

খামারিদের দাবি, সরকারি মুরগি প্রজনন ও খামার উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানটি বৃহৎ পরিসরে বাচ্চা উৎপাদন শুরু করলে বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলা সম্ভব। একই কথা বিশ্বাস করেন এই খামারের কর্মকর্তারাও। তবে খামারটিকে আধুনিকায়ন না করার ফলে সেই সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ। জানা গেছে, বরিশাল নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকায় ১৯৫৪ সালে ১৮ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয় মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার। খামারের ১৮ একর জায়গার মধ্যে ১২ একর জুড়ে একটি দিঘি। দিঘির আশপাশের বাসিন্দারা যে যেভাবে পারছে, দিঘি ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছে। নির্মাণকালীন সময়ের ১২টি শেডের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি শেড চালু করা হয়েছে কয়েক বছর ধরে।

বাজার রোডের পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন বলেন, আমানতগঞ্জের মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার দিয়ে বরিশালবাসীর কোনো উপকার হয় বলে মনে হয় না। অনেক বছর ছিল বন্ধ। এখন কিছু কিছু বাচ্চা ফুটায় তাতে বড় বা ছোট কোনো খামারিদের উপকার হয় না। গৃহস্থলীর জন্য শখ করে মুরগি পালন করলে ওখান থেকে উপকার পাওয়া যায়। খামারি রাজু বলেন, সরকার যদি ন্যায্যমূল্যে মুরগির বাচ্চা দেওয়ার ব্যবস্থা করতো তাহলে মুরগির বাজার এত অনিয়ন্ত্রিত হত না। আমরা ৬০ টাকায় মুরগির বাচ্চা কিনে তা লাভ রেখেই তো বিক্রি করব। সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম খান বলেন, এক অর্থ বছরে ৮০ হাজার মুরগির বাচ্চা ফুটানোর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে আমরা ৪৭ হাজারের বেশি বাচ্চা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। বছরে ১৫ হাজার বাচ্চা পালনের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়; আমরা ৭ হাজার বাচ্চা পালন করেছি। তিনি জানান, একদিন বয়সী বাচ্চা ১২টাকা দামে প্রান্তিক খামারিদের দেওয়া হয়। আর ৬ টাকা দামে বিক্রি করা হয় ডিম। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে আমাদের এখান থেকে ডিম ও বাচ্চা নিয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তারা লাভবান হচ্ছেন।

প্রতি ক্ষুদ্র খামারিকে আমরা ৩শ করে বাচ্চা দিয়ে থাকি। মুরগি প্রজনন ও খামার উন্নয়ন কেন্দ্রের উন্নয়ন কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ডিম ফুটানোর জন্য আমাদের দুটি অটো ম্যানুয়েল হ্যাচারি রয়েছে। যেখানে ৮০ হাজার বাচ্চা ফুটানো সম্ভব। যদি এখানে অটো মেশিনের হ্যাচারি দেওয়া হয় তাহলে বছরে দুই লাখ বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব। এতে করে আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে বড় বড় খামারিদের একদিনের মুরগির বাচ্চা দিতে পারব। তখন বাইরে বাচ্চার যে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তা ভেঙে ফেলা সম্ভব। এমনকি এই খামারটি পুরোপুরি আধুনিকায়ন হলে আমরা পরোক্ষভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।