ইফতারে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মশলা মাখা চিকেন

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সাধারণত মুরগি বা চিকেন ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। তাই বছরের অন্য সময়তো বটেই রমজান মাসের ইফতারেও জুড়ি নেই ভাজা ও কাবাব করা মুরগির মাংসের। ছোট-বড় সবার মুখরোচক খাবার এটি। প্রতিদিন ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলেই রাজশাহী নগরীর বড় বড় হোটেল-রেস্তোরাঁর বাইরে ভেসে বেড়ায় চিকেন কাবাব করা বা ভাজার সুবাস।

বিশালকৃতির খাবার ট্রেতে করে সযত্নে আস্ত চিকেন কাবাব সাজিয়ে রাখা হয় থরে থরে। এর আগে চিকেনগুলো সরাসরি আগুনে বা গরম তেলের ওপর চটপটে মশলা মাখিয়ে বিশেষভাবে পুড়িয়ে বা ভেজে নেওয়া হয়। কাবাব হতে থাকা আস্ত মুরগিগুলো দেখলে অনেক ভোজনরসিক মানুষের পক্ষেই লোভ সামলানোই দায়। আদিকাল থেকেই বাঙালির খাবার প্রীতি একটু বেশিই। বলা চলে খাবারের ব্যাপারে অনেকটা শৌখিনও। নিত্য নতুন স্বাদ আর পদের অনেক খাবারকেও ভিন্ন মাত্রা দিয়ে নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর রমজান মাস সংযমের হলেও নিজের বা পরিবারের শিশু-কিশোরদের জন্য প্রায় দিনের ইফতারে এমন ধরনের খাবার পাতে রাখতে সাধ ও সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করেন অনেকেই। আর এসব খাবারের নাম তাই বলেও শেষ করা যাবে না। এজন্য রমজান এলেই ইফতারে এসব খাবারের কদর দ্বিগুণ বেড়ে যায়। রাজধানী ঢাকার চক বাজারের ইফতারের সাদৃশ্য এ রাজশাহীতেও আনতে তাই রমজানের ইফতারে আস্ত চিকেন বিশেষভাবে লোভনীয় হয়ে উঠেছে রসনা বিলাসীদের কাছে। সাধারণত রেস্তোরাঁয় গিয়েই পছন্দের তালিকা থেকে ওর্ডার করা প্রথম সুস্বাদু মুখরোচক খাবার এটি। এক সময় মধ্যপ্রাচ্যে বেশি প্রচলিত ছিল। শেষ কয়েক বছর থেকে দেশীয় খাবার সংস্কৃতিতে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে মুরগি দিয়ে তৈরি করা বিশেষ এ খাবারটি। প্রসেস বা মেডিমেট করা আস্ত মুরগি একটি বিশেষ কড়াইয়ে অধিক সময় ধরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ভেজে নেওয়া হয়। মুরগির কাবাব করার এ পুরো প্রক্রিয়াটিই চলে ক্রেতাদের চোখের সামনেই। মূলত খাবারটির প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ ও খাওয়ার জন্য চাহিদা তৈরি করাই এর লক্ষ্য। এছাড়া প্রক্রিয়াটিতে খাবারটি নিয়ে ক্রেতাদের মনেও সন্দেহ বা আশঙ্কা কম থাকে। তাই ইফতারে অন্য আইটেমের চেয়ে মশলামাখা আস্ত চিকেন বেশি চলে। রমজানে ফুল, হাফ বা কোয়াটার গ্রিল পরিমাপে বেশ চলছে এ আস্ত চিকেন। গরুর মাংসের দাম বাড়ায় মানুষের ঝোঁক কমেছে। তাই বেড়েছে মুরগির মাংসের এ খাবারের কদর। রাজশাহীর অভিজাত রেস্তোরাঁ বিশাল, চিলিস, মিটলফ, রহমান’স বারবিকিউ, মেমরি, রহমানিয়া, রহমানিয়া-প্লাস ও বিন্দুসহ নগরীর প্রথম শ্রেণির সব রেস্তোরাঁগুলোই তাই বিশেষভাবে উপস্থাপন করছে আস্ত মুরগি দিয়ে তৈরি করা এ খাবারটি। প্রতিদিন বিকালের টেবিলে ইফতার পণ্যের পসরায় বাড়তি আকর্ষণ তৈরি করছে আস্ত চিকেন। রহমানিয়া রেস্তোরাঁর মালিক রিয়াজ আহমেদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, এ খাবারটি বড় থেকে ছোট প্রায় সব বয়সিদেরই পছন্দের। আস্ত গ্রিল চিকেনের দাম রাখা হচ্ছে ৩৫০ টাকা। হাফ ১৭৫ টাকা। আর কোয়াটার চিকেন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ইফতার কিনতে আসা আলী আহমদ নামে এক ক্রেতা বলেন, রমজানের প্রথমভাগ প্রায় শেষ। এরই মধ্যে অনেকগুলো রোজা চলে গেছে। এ সময়ে পরিবারের সদস্যদের ইফতারের স্বাদের ভিন্নতা দিতে এ আস্ত চিকেন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ির ছোট-বড় প্রায় সবারই পছন্দের খাবার এটি। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ইফতার করবেন। তাই এ আস্ত চিকেনই থাকবে ইফতারের মূল আকর্ষণ। প্রতিদিন সম্ভব নয়, মাসে এক দুইবার হলেও ইফতারে এ আইটেম রাখার চেষ্টা করেন বলে জানান তিনি।