খুলনাঞ্চলে বেড়েছে চালের উৎপাদন, কমেনি দাম

প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নানা ধরনের প্রতিকূলতার মধ্যেও খুলনাঞ্চলে বেড়েছে চালের উৎপাদন। চালের উৎপাদন বাড়লেও বাজারে দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। ক্রেতাদের বাড়তি দামেই চাল কিনতে হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চালের দাম বাড়া, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বেড়েছে। ৩ বছরে খুলনা অঞ্চলের চার জেলায় ১৬ হাজার ২১ লাখ ৮৯৫ হেক্টর জমি আবাদ করা হয়েছে এবং ৫৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩১১ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করা হয়েছে। প্রতি বছর উৎপাদন বাড়ছে।

সূত্রে আরো জানা যায়, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও নড়াইল জেলায় উৎপাদিত ধান ও চালের মধ্যে রয়েছে আউশ, রোপা আমন, বোনা আমন ও বোরো। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আউশ আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ৮৭৫ হেক্টর। চাল উৎপাদন হয়েছে ৫৫ হাজার ৮১৬ মেট্রিক টন। বোরো আমন আবাদ করা হয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৮১০ হেক্টর। চাল উৎপাদন হয়েছে ৮ হাজার ১১ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। বোনা আমন আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৮৩৫ হেক্টর। চাল উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৯৩৫ মেট্রিক টন এবং বোরো ধান আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ হেক্টর এবং চাল উৎপাদন হয়েছে ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৬৪৭ মেট্রিক টন।

২০২০-২১ অর্থবছরে আউশ আবাদ হয়েছে ২৬ হাজার ৭৯০ হেক্টরে। চাল উৎপাদন হয়েছে ৬২ হাজার ১৭৯ মেট্রিকটন। বোরো আমন আবাদ করা হয়েছে ২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৫ হেক্টর। চাল উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ৮ হাজার ২০৩ মেট্রিকটন। বোনা আমন আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৭৭০ হেক্টরে। চাল উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ৯৫০ মেট্রিকটন এবং বোরো ধান আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার ৪১০ হেক্টর এবং চাল উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫২ মেট্রিক টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে আউশ আবাদ হয়েছে ২৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর। চাল উৎপাদন হয়েছে ৫৮ হাজার ৮৩৫ মেট্রিকটন। বোরো আমন আবাদ করা হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ১১০ হেক্টরে। চাল উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ২৬ হাজার ৮৩১ মেট্রিক টন। বোনা আমন আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৫১৮ হেক্টরে। চাল উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ৬৫৩ মেট্রিক টন এবং বোরো ধান আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯২ হেক্টর এবং চাল উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন। গত বছর ভরা মৌসুমে প্রয়োজনের তুলনায় বৃষ্টি কম হয়েছে। ফলে আবাদে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ধানের আমনের ক্ষতি হয়েছে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে কৃষক ফসল আবাদ করে তাদের স্বপ্ন পূরণ করেছেন। কৃষককে সরকার প্রণোদনা দিয়েছে। মাঠ পর্যায়ে সঠিক তদরকি করা হচ্ছে। এ বছরে বোরো আবাদের সময় আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। বিগত ৩ বছরে ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। ফলে চালের উৎপাদন বেড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফরিদুল হাসান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আবাদ ভালো হয়েছে। সরকার কৃষককে প্রণোদনা দিয়েছে। এই অঞ্চল চাল উৎপাদনে সফলতা লাভ করেছে। মাঠপর্যায়ে কৃষককে সঠিক পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। কৃষক চাল উৎপাদনে উৎসাহ বোধ করছেন।

খুলনার সবচেয়ে বৃহৎ বাজারের (বড় বাজার) অন্যতম চাল ব্যবসায়ী মুরাদ ট্রেডার্সের পরিচালক জিয়াউল হক মিলন গণমাধ্যমকে বলেন, চালের বাজারে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। সরবরাহের সংকটও নেই। চালের উৎপাদন বাড়লেও বাজারে চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। কয়েক মাসে চালের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। সব ধরনের চাল উচ্চমূল্যে এসে স্থিতিশীল হয়ে গেছে। তাতে সাধারণ মানুষের কষ্ট কমছে না।