রংপুরের গঙ্গাচড়া

থানা যেন পাখির অভয়ারণ্য

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর

পুলিশি প্রহরা আর শিকারিমুক্ত নিরাপদ পরিবেশ পেয়ে তিস্তা নদীবেষ্টিত রংপুরের গঙ্গাচড়া মডেল থানা কম্পাউন্ডটি পাখির কলতানে মুখর হয়ে ওঠে প্রতিদিন। দোয়েল, কোয়েল, বকসহ অসংখ্য দেশীয় পাখি আবাসস্থল গড়েছে থানা কম্পাউন্ডের অন্তত ৫০টি গাছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আহার শেষে থানার ভেতরের গাছগুলোকেই তারা আশ্রয়স্থল মনে করে।

উপজেলায় তিস্তা, ঘাঘট নদীসহ কয়েকটি বড় জলাশয় রয়েছে। এসব মুক্ত জলমহালে মাছ, ব্যাঙ এবং শামুকসহ নানা প্রাকৃতিক খাবার প্রচুর পরিমাণে থাকে। ফলে, এসব জলাশয়ে অবাধ বিচরণ করে পাখিরা। কয়েক বছর ধরে পাখিরা গঙ্গাচড়া মডেল থানা প্রাঙ্গণের গাছগুলোতে আবাসস্থল তৈরি করেছে। থানা কম্পাউন্ডে গিয়ে দেখা যায়, থানার পেছনের দিকের আম, কাঁঠাল, মেহগনিসহ বিভিন্ন গাছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বাসা বেঁধেছে।

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি দুলাল হোসেন জানান, দোয়েল, কোয়েল, বকসহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির পাখি সারা দিন উপজেলার নদী, খাল, বিল চষে বেড়ায়। এসব পাখিদেরই একটি অংশ নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে থানার ভেতরের গাছগুলোকে বেছে নিয়েছে।

ওসি আরো জানান, একসময় এলাকার বিভিন্ন বাড়ির গাছে পাখি বাসা করত। স্থানীয়রা পাখি শিকারে নেমে পড়ায় শিকারির ভয়ে পাখিগুলো থানার ভেতরের গাছগুলোকে নিরাপদ মনে করে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পাখিগুলো খাবারের সন্ধানে নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ে চলে যায়। আবার সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে থানা প্রাঙ্গণের গাছগুলোতে ফিরে আসে। পাখিদের সুরক্ষা এবং অভয়ারণ্য সৃষ্টির জন্য থানা প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণসহ নানা পরিকল্পনা থানার পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে। গঙ্গাচড়া মডেল থানার পরিদর্শক মমতাজুল হক বলেন, প্রতিদিন ডিউটির পাশাপাশি পাখিদের যাতে কেউ ক্ষতি না করতে পারে, সেজন্য ডিউটিরত পুলিশ সদস্যদের বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই পাখি সুরক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।

তিনি জানান, পাখিদের অতিথির মর্যাদায় রাখাতে থানার ১০০ গাছে পাখির বাসা হিসেবে মাটির কলস বেঁধে দিয়েছেন। কেউ যাতে পাখিদের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য থানায় কর্তব্যরত পুলিশকে সার্বক্ষণিক নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।