ঢাকা ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার বিকল্প নেই : উপাচার্য

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার বিকল্প নেই : উপাচার্য

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে গতকাল শনিবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, স্বাস্থ্য মানুষের অমূল্য সম্পদ। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে। রোগ প্রতিরোধের উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার বিকল্প নাই। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী ও কর্মকর্তারা উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কৈশোরকালীন জীবনমান; বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার অসংক্রামক রোগ ও ঝুঁকিসমূহ; যেমন খাদ্য, তেমন স্বাস্থ্য; চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষায় বিষয় বাছাইয়ের প্রবণতা ও প্রভাবিত হওয়ার কারণসমূহ এবং কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক গবেষণার ফলাফল যথাক্রমে উপস্থাপন করেন পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক, সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মারুফ হক খান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিজয় কুমার পাল এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিন। পরবর্তীতে মুক্ত অলোচনায় সকলের জন্য সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক তাঁর উপস্থাপিত গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলেন, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত জীবনযাত্রার মান কেমন এবং জীবনযাত্রার ভালো বা খারাপ মানের সাথে সম্পর্কিত কারণগুলো অনুসন্ধান করা ছিল এই গবেষণার উদ্দেশ্য। এতে দেখা যায়, ৫২ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক মানের থেকে কম ছিল, এর মধ্যে ৫ শতাংশ এর জীবনযাত্রার মান অনেক খারাপ ছিল এবং ৪৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক ছিল। বেশি বয়সি কিশোর-কিশোরী, যাদের ভাই বোন বেশি, যাদের বাড়িতে খাদ্য নিরাপত্তা কম, যারা বিষণ্ণতা, উদ্বিগ্নতা এবং মানসিক চাপে ভুগছিল তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জীবনযাত্রার মান খারাপ ছিল। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জীবনযাত্রার ভালোমানের সাথে সম্পর্কিত বিষয়সমূহ হলো সন্তানের প্রতি পিতামাতার ভালো আচরণ, কিশোর কিশোরীদের ভালো মানসিক অবস্থা এবং তাদের সমস্যা মোকাবিলা করার সক্ষমতা। প্রতি ১০০ জন কিশোর-কিশোরীর মধ্যে ৪৮ জনের স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত জীবনযাত্রার মান ভাল আর বাকী ৫২ জনের মান খারাপ থাকা অবশ্যই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মারুফ হক খানের বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার অসংক্রামক রোগ ও ঝুঁকিসমূহ নিয়ে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলা হয়, উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ করে উচ্চ লবণাক্ত এলাকায় বসবাসকারীদের মধ্যে শতকরা ৬১ জন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন এবং শতকরা ৪০ জনের রক্তে মাত্রাতিরিক্ত শর্করা রয়েছে। সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ খালেকুজ্জামানের যেমন খাদ্য, তেমন স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলা হয়, পাউরুটি, কোমল পানীয়, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই এবং আচার পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে এগুলোতে স্বাস্থ্যঝুঁকি করতে পারে এমন উপাদান যেমন অতিরিক্ত লবণ, ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, লেড, ট্রান্স ফ্যাটি এসিড ইত্যাদি রয়েছে। সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিজয় কুমার পালের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ¯œাতকোত্তর মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের পেশা গঠনে বিশেষত্ব বাছাইয়ের প্রবণতা ও প্রভাবিত হওয়ার কারণসমূহ নিয়ে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে নারী শিক্ষার্থীদের হার ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের অনুপাত প্রায় সমান পর্যায়ে পেঁছেছে কিন্তু বিশেষত্ব বাছাইয়ে নারী পুরুষ উভয় শিক্ষার্থী তাদের জেন্ডার অনুযায়ী বিশেষত্ব বাছাইয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিন-এর কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ২২ জন কিশোর কিশোরী। কিশোর কিশোরীদের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য কৈশরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কৈশরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গবেষণা করে দেখা গেছে যারা স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসছে তাদের বেশীরভাগ কিশোরী। অভিভাবক, শিক্ষক এবং সেবা প্রদানকারী কিশোর-কিশোরীদের সেবা গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত