রাজশাহীর সিল্ক পাড়ায় ঈদের হাওয়া

প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদ সমাগত প্রায়। ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে রাজশাহীর সিল্ক পাড়ায়। দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের। দিন যত এগিয়ে আসছে, ক্রেতাদের চাপ ততই বাড়ছে। গতবারের চেয়ে এবার সিল্ক পণ্যের দাম রকমভেদে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতা আমদানিতে বাড়তি টাকা লাগার কারণে কাপড়ের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিন রাজশাহীর সপুরা এলাকার সিল্ক পাড়া ঘুরে দেখা গেছে, একদিকে যেমন গুটি থেকে সুতা কাটা হচ্ছে, অন্যদিকে সেই সুতা থেকে মেশিনের মাধ্যমে কাপড় বোনাতে ব্যস্ত কারিগররা। সেই কাপড়ে বিভিন্ন নকশা ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পীরা।

এদিকে যখন কারখানায় কাপড় বানাতে ব্যস্ত কারিগররা, তখন পাশের সিল্ক শো-রুমগুলোতে ক্রেতা সামলাতে হিমশিম কর্মচারীরা। রাজশাহীর সপুরা সিল্ক, উষা সিল্ক, আমানা সিল্ক, রাজশাহী সিল্কসহ সব প্রতিষ্ঠানেই একই চিত্র।

গত ২ বছরে তেমন সাড়া না পেলেও এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে রোজার আগে থেকেই চাপ বেড়েছে ক্রেতার। এবার সিল্কের সাড়ি ও পাঞ্জাবির দিকে ঝুঁকছেন ক্রেতারা। পাশাপশি থ্রিপিস ও অন্যান্য সামগ্রীও কিনছেন তারা।

সপুরা সিল্কে শাড়ি কিনতে আসা রায়হানা রহমান বলেন, আমি রাজশাহীর মেয়ে, যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠানে সিল্কের কাপড় না হলে চলে না। তাই এ বছর ঈদেও রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্কের কাপড় কিনতে এসেছি। তবে এবার দাম একটু বেশি। কিন্তু নতুন ডিজাইন এসেছে।

উষা সিল্কে শাড়ি দেখছিলেন সরকারি কর্মচারী মঞ্জিলা ইয়াসমিন। গত শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় এদিন তিনি এসেছেন ঈদের বাজার করতে। তিনি বলেন, আজ ছুটির দিন। সব সময়ই আমরা সিল্কের শাড়ি পছন্দ করি। এবারও শাড়ি কিনতে এসেছি। এবার একেক শো-রুমে একেক ডিজাইনের শাড়ি এসেছে। এগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছি।

সপুরা সিল্ক মিলস লিমিটেডের পরিচালক আশরাফ আলী বলেন, বিগত কয়েক বছর করোনার কারণে আমাদের খারাপ সময় গেছে। গত এক দেড় মাসে ক্রেতাদের সাড়া ভালো। আশা করছি আগামী যে কয়েক দিন আছে ভালো সাড়া মিলবে। তিনি বলেন, যেহেতু ৩ বছর আমরা সময় পেয়েছি, তাই নতুন নতুন ডিজাইন, ফেব্রিক্সের ব্যবহার করতে পেরেছি। এগুলো ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে। এবার মোসলিন, র-সিল্ক শাড়ি ও থ্রি-পিসের ভেরিয়েশন এনেছি। তবে শাড়ির চাহিদা বেশি। তিনি বলেন, শাড়ির দাম সিল্কের সুতা ও কাজের ওপর নির্ভর করে। এবার ২ হাজার ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দামের শাড়ি আছে। এছাড়া থ্রি-পিস ৫ হাজার থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দামের রয়েছে। পাঞ্জাবি সাড়ে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। আশরাফ আলী বলেন, এবার সুতা আমদানি করতে বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে। গড়ে সব কিছুর দাম না বাড়িয়ে কিছু কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু নতুনত্বের কারণে বাড়তি দামে ক্রেতাদের অভিযোগ নেই। রাজশাহীর উষা সিল্কের পরামর্শক এএফএম লুৎফর রহমান বলেন, মূলত সুতা আমদানি করা হয়। সেই সুতার দাম এবার বেড়েছে। তাই পণ্যের দাম একটু বেড়েছে। তবে আমরা সব ধরনের পণ্যে নতুনত্ব এনেছি। পাশাপাশি আমাদের প্রতিটি পণ্যে একই রকমের কাজ আনা হয়েছে। এখানে আপনি একটি ২৫ হাজার টাকা দামের শাড়িতে যা পাবেন, নরমাল শাড়িতেও ঠিক সেই ডিজাইন পাবেন। তিনি বলেন, এবার শুরু থেকেই ক্রেতার চাহিদা আছে। আশা করছি, গত দুই বছরের চেয়ে এবার ভালো বিক্রি হবে।