লাগামছাড়া খুলনার সবজি বাজার

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র মাহে রমজানের মধ্যেও খুলনাবাসীকে সইতে হচ্ছে ৩৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি তাপ। শরীর এই তাপ সহ্য করতে পারলেও সবজি বাজারে দামের চাপ সহ্য করতে পারছে না মানুষ। সবজির মূল্য যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত শুক্রবার ৬০ টাকায় যে সবজি কেনা গেছে গতকাল শনিবার সেই সবজি ৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। কোনো কারণ ছাড়াই বেড়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। তবে ডিমের দাম হালিতে ৪ থেকে ৬ টাকা কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল শনিবার নগরীর নিরালা বাজার, ময়লাপোতা বাজার, টুটপাড়া জোড়াকল বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজারসহ একাধিক বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লারসহ অন্যান্য মুরগি। কিন্তু ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স, কাকরোল, করোলা, উচ্ছে, বেগুন, শষা, কুশিসহ অন্যান্য সবজির দাম যেন আকাশে গিয়ে ঠেকেছে। ৮০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না এসব সবজি। সেইসঙ্গে বেড়েছে গত ৪-৫ মাস ধরে দামের দিক থেকে তলানিতে থাকা টমেটোর। বর্তমানে টমেটোও বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে।

নিরালা বাজারের মুরগি বিক্রেতা কাশেম আলী জানান, গত মার্চ মাসে দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্রয়লার মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়েছে। কিন্তু এখন সেই দাম ২০০ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এছাড়া লেয়ার বিক্রি করছেন ৩২০ ও ৩১০ টাকা কেজিতে। নগরীর ময়লাপোতা এলাকার ডিম বিক্রেতা সোহরাব হোসেন বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীরা ডিম যত দ্রুত পারা যায় বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করছেন। আকার ভেদে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে পাইকারি ৩৪ থেকে ৪০ টাকায়। যা বাজারে ৪০ থেকে ৪৪ টাকায় খুচরা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বাজারে সবজির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে আলুর দাম। গত সপ্তাহে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এই সপ্তাহে তা ৩৩ টাকা হয়েছে। একইভাবে পেঁয়াজের দামও কেজি প্রতি ২-৩ টাকা করে বেড়েছে। বাজারে ডিম ও মুরগির দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যে থাকলেও সবজি যেন সব স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে। ৭০ থেকে ৮০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না কোনো সবজি। রোজার শুরুতে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া বেগুন আজও বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, যা রোজার মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় নেমে আসে। অন্যদিকে ৪০ টাকার শসা ৮০ টাকা, লেবুর হালি ৫০ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারের সবজি বিক্রেতা রহিম বেপারি বলেন, গতকাল শনিবার বাঁধাকপি প্রতি পিস ৩০ টাকা, শিম ৬০, লাউ ৪০ থেকে ৫০ (প্রতি পিস), উচ্ছে কেজি ৭০, বরবটি ৭০, পেঁপে ৩০, ঝিঙে ৮০, কুশি ৭০, কচু ৬০, কাকরোল ৮০, লাউ শাক ৫০, লাল শাক ৪০, পালং শাক ৪০, মিষ্টি কুমড়া ৩০, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।

নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মাছ বিক্রেতা বাদশা, নান্টু ও আলিফ বলেন, বাজারে এখন মাছের সরবরাহ বলতে গেলে একেবারেই নেই। সাগরের মাছও আমদানি কম। তবে গত সপ্তাহে যে দাম ছিল এখনো সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ।

বাজারে এখন এক আধা কেজি সাইজের রুই, মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা, এক কেজি ওজনের মাছ ২৫০ থেকে ২৭০, আর এক কেজির বেশি ওজনের মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। টেংরা মাছ ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, শোল ও টাকি মাছ ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, দেশি কই মাছ ৭০০ টাকা ও পাবদা ৩৫০ টাকা।