ঢাকা ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর

রংপুর বিভাগে ৯ মাসে সোয়া কোটি টাকার রাজস্ব আদায়

রংপুর বিভাগে ৯ মাসে সোয়া কোটি টাকার রাজস্ব আদায়

জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর চলতি অর্থবছরের গত ৯ মাসে রংপুর বিভাগের আট জেলায় অভিযান পরিচালনা করে আদায়কৃত জরিমানার অর্থ থেকে ১ কোটি ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫০ টাকা সরকারি কোষাগারের রাজস্ব খাতে জমা করেছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরের বিগত জুলাই ‘২২ থেকে মার্চ ’২৩ মাস পর্যন্ত ৯ মাসে বিভাগের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন বাজার এবং শপিংমলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভোক্তা সাধারণের স্বার্থ সংরক্ষণে মোট ১ হাজার ১৫৫টি পৃথক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময়ে সংশ্লিষ্ট বাজার এবং শপিংমলের ২ হাজার ৭০৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার পরিপন্থি কার্যক্রম অনুযায়ী পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা, সেবার মূল্য তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করা, ধার্যকৃত মূল্যের অধিকমূল্যে পণ্য বা ওষুধ বিক্রি, ভেজাল পণ্য বা ওষুুধ বিক্রি, খাদ্যদ্রব্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ, মিথ্য বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে প্রদান না করা, ওজনে ও পরিমাপে কারচুপি, নকল পণ্য উৎপাদন, মেয়াদোর্ত্তীণ পণ্য বা ওষুধ বিক্রিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ২০০৯ সনের বিধান অনুযায়ী কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড শাস্তি প্রদান করা হয়। এসব ভোক্তা অধিকার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মোট ১ কোটি ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ভোক্তা সাধারণের সাথে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অধিকার ক্ষুণেœর কারণে সংক্ষুব্ধ ভোক্তাগণের পক্ষ থেকে একই সময়ে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়সহ আট জেলার জেলা কার্যালয়ে মোট ৩৮২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ সময়ে বিগত অর্থবছরের অভিযোগসহ মোট ৩৭৮টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয় এবং বর্তমানে ১২৮টি অভিযোগ অনিষ্পত্তি অবস্থায় রয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে নিষ্পত্তির মাধ্যমে ৪১টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানা করে তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। আদায়কৃত জরিমানার অর্থ থেকে ভোক্তা অধিকার বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ৪৩ অভিযোগকারীকে আদায়কৃত অর্থের মধ্য থেকে ২৫ শতাংশ হিসেবে ৪৯ হাজার ৫৭৫ টাকা প্রদান করা হয়। এসব আদায়কৃত অর্থসহ সরকারি কোষাগারের রাজস্ব খাতে মোট ১ কোটি ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫০ টাকা জমা করা হয়েছে।

ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোহাম্মদ আজাহারুল ইসলাম এই প্রতিনিধিকে জানান, ভোক্তা সাধারণের র্স্বাথসংরক্ষণ নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ২০০৯ সালের বিধান প্রতিপালন এবং সেই অনুযায়ী ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে পণ্য উৎপাদন বা প্রস্তুত, বা বিক্রয়কালীন ভোক্তা স্বার্থ অধিকার ব্যহত করার বিরুদ্ধে আমাদের চলমান অভিযান এবং কার্যক্রম অব্যহত থাকবে। এছাড়া ভোক্তা সাধারণ প্রতিনিয়ত যেসব পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে জীবন এবং সম্পদের ক্ষতিসহ প্রতারিত হচ্ছেন, সেসব বিষয়ে প্রতারক এবং জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে আমাদের সম্মিলিত অভিযান আরো জোরদার এবং অব্যাহত রাখা হবে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের আট জেলার কর্মকর্তারা গত ৯ মাসে বিভিন্ন এলাকায় ৯২টি সচেতনতামূলক সভা এবং ৫৭টি সেমিনারেরও আয়োজন করেছে।

উল্লেখ্য, এ সময়ে বিভাগের বিভিন্ন বাজার এবং শপিংমলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভোক্তা সাধারণের স্বার্থ সংরক্ষণে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে রংপুর জেলায় ৯৩টি অভিযানে ১১ লাখ ৮৪ হাজার ২৫০ টাকা, গাইবান্ধা জেলায় ১২২টি অভিযানে ১২ লাখ ৩৮ হাজার ২৫০ টাকা, কুড়িগ্রাম জেলায় ১০২টি অভিযানে ৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, লালমনিরহাট জেলায় ১৪১টি অভিযানে ১২ লাখ ৬ হাজার ৮৭৫ টাকা, নীলফামারী জেলায় ১১১টি অভিযানে ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা, পঞ্চগড় জেলায় ১০৪টি অভিযানে ৬ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৯৫টি অভিযানে ১২ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫০ টাকা এবং দিনাজপুর জেলায় ১৩২টি অভিযানের মাধ্যমে ২৭ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত