মামুনুল হকের বিরুদ্ধে পুলিশসহ ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নবম দফায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য শেষে আদালত আগামী ৬ জুন পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। সাক্ষ্যদাতারা হলেন, চার্জশিটের ২৭ নাম্বার সাক্ষী সোনারগাঁ থানার তৎকালিন এএসআই এজাজুল হক ও চার্জশিটের ৩০ নাম্বার সাক্ষী মামুনুল কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার ভাড়াটিয়া বাসার মালিক মোশারফ হোসেন। তবে এদিন সাক্ষ্য দেয়ার জন্য চারজনকে সমন দেয়া হয়েছিল।

তাদের মধ্যে মামলার বাদী কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমানের স্বাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল। সেই সঙ্গে জান্নাত আরা ঝর্ণার সাবলেট ভাড়াটিয়া সালমা খানেরও স্বাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা দুইজন আসেনি। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আজ আদালতে যারা সাক্ষী দিয়েছেন তাদের জবানবন্দির সঙ্গে বক্তব্যের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা সবাই বলেছেন, আমরা অন্যদের মাধ্যমে শুনেছি। এতেই প্রমাণিত হয় এটি একটি মিথ্যা মামলা। আমার বিশ্বাস আদালতের রায়ে মামুনুল হক নির্দোষ প্রমাণিত হবে। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। যারাই সাক্ষী দিয়েছেন তারা সবাই বলেছেন মামুনুল হক ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত। ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেছিল। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছিল মামুনুল হককে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সেইসঙ্গে আদালতপাড়াজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।

এর আগে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।

ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে। এরপর গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামুনুলকে। পরে ওই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে, ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।