গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক সেবায় রোগী স্বল্পতা

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ময়মনসিংহ ব্যুরা

সারা দেশের মতো ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে। এ স্বাস্থ্যসেবার একমাস পার হলেও প্রচারণার অভাবে দেখা মিলছে না রোগীর। একজন করে চিকিৎসক দিয়েই চলছে চিকিৎসাসেবা। বৈকালিক সেবা কার্যক্রমেও মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ দেখা গেছে চিকিৎসকের কক্ষে।

সম্প্রতি গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, রোগীর উপস্থিতি নেই বললেই চলে। বৈকালিক চিকিৎসাসেবার কক্ষ খুঁজতে খুঁজতে হাসপাতালের একেবারে শেষ প্রান্তে গিয়ে দেখা মেলে মেডিক্যাল অফিসার ডা. নাইমা আফরিন তৃষার। তিনি ২২ মাস বয়সি সিদরাতুল মুনতাহা নামের এক শিশুকে দেখছিলেন। ওই শিশুর সঙ্গে ছিলেন দুই নারী ও এক পুরুষ। এসময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং ইনচার্জ রওশন আরা খাতুন মেডিক্যাল অফিসারের সহকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সিদরাতুল মুনতাহার চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হয়ে এলে কথা হয় তার বাবা আব্দুল হাকিমের সঙ্গে। তিনি উপজেলার উস্থি ইউনিয়নের হাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

আব্দুল হাকিম বলেন, হঠাৎ করেই বাচ্চার ডায়রিয়া ও পেটব্যথা শুরু হয়। এজন্য তাড়াহুড়ো করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখানে দেখানোর পর ২০০ টাকা ফি নিয়েছে। তবে, চিকিৎসক ভালো করেই দেখেছেন। আমি মনে করি, সারা দেশের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এমন বৈকালিক চিকিৎসাসেবা চালু করা দরকার। তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ অল্প টাকায় ভালো চিকিৎসাসেবা পেত।

নার্সিং ইনচার্জ রওশন আরা খাতুন বলেন, কয়েকদিন হলো হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা চালু হয়েছে। তাই, রোগী কম আসে। এখানে কেমন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়, তা মানুষ জানে না। সুযোগ-সুবিধাগুলো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছালে অবশ্যই চিকিৎসা নিতে আসবে।

মেডিক্যাল অফিসার ডা. নাইমা আফরিন তৃষা বলেন, প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়। আজ মাত্র একজন রোগী আসছে। সপ্তাহে চারদিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও দুদিন মেডিক্যাল অফিসার রোগী দেখেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ফি ৩০০ টাকা ও মেডিক্যাল অফিসারের ফি ২০০ টাকা করে নেয়া হয়।

তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে নিয়মিত প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে, মাইকিং করা হচ্ছে। তারপরও রোগী কম আসে। তাছাড়া, বৈকালিক চিকিৎসাসেবা চালু হয়েছে মাত্র কয়েকদিন হলো। বিষয়টি সম্পর্কে নিয়মিত প্রচারণা চালালে মানুষ জানতে পারবে। তখন রোগীও বাড়বে।

হাসপাতাল গেটের পাশে চা বিক্রি করেন আবুল হোসেন। তিনি বলেন, হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা চালু হয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই। কোনোদিন মাইকিং বা প্রচারণা করেছে বলেও দেখিনি।

এ বিষয়ে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন খান মানিক বলেন, এখানে নিয়মিত রোগী দেখা হচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকদের মাধ্যমে নিয়মিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে। টেলিভিশনেও প্রচার করছে। তাছাড়া রমজান মাসে এই সেবাটা চালু হয়েছে। তখন মাইকিং করা হয়নি। কিছুদিনের মধ্যে মাইকিং করেও প্রচারণা করা হবে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর নির্ভর করবে কতজন চিকিৎসক বৈকালিক সেবা দেবেন।