ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুরে নির্মাণ করা হচ্ছে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

রংপুরে নির্মাণ করা হচ্ছে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

উত্তরাঞ্চলের নারীদের কারিগরি শিক্ষায় আরো দক্ষ করতে রংপুরে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে নগরীর শালবন এলাকায় তিন একর জমির ওপর ইনস্টিটিউটটি নির্মিত হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি টাকা। নগরীর শালবন এলাকায় রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশেই এটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

কারিগরি শিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের চাকরিযোগ্য দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে এটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এখান থেকে নারীরা নিজেদের যুগোপযোগী কারিগরি শিক্ষায় আরো বেশি প্রস্তুত করার সুযোগ পাবে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ‘চারটি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনা শীর্ষক’ প্রকল্পের আওতায় ৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ৭টি প্যাকেজের মাধ্যমে এই প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। রংপুর ছাড়াও সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরে গৃহীত প্রকল্পের আওতায় চারটি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প করা হচ্ছে। প্রকল্পের মধ্যে থাকছে- ভূমি অধিগ্রহণ/ক্রয়, ভূমি উন্নয়ন, প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন, ওয়ার্কশপ, অধ্যক্ষের বাসভবন, শিক্ষক এবং অফিসারদের জন্য ডরমেটরি, স্টাফ কোয়ার্টার, মহিলা হোস্টেল, সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, গার্ড রুম, অনাভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক কাজ, গভীর নলকূপ, পানির পাইপলাইন, আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজারভার, ওভারহেড পানির ট্যাংক, অভ্যন্তরীণ সারফেস ড্রেন, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, ট্রান্সপোর্ট/ভেহিকেল, মেশিনারি/যন্ত্রপাতি, জার্নাল এবং বই, আসবাবপত্রসহ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা।

সরকারের কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও কাজ শুরু হয় বিলম্বে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া হাতে নেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যাদেশ অনুযায়ী এই প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও মাঝে মহামারি করোনায় কিছুটা থমকে যায়। মহামারি করোনার প্রভাব কিছুটা কমলে বিধিনিষেধ মেনে পরবর্তীতে ২০২১ সাল থেকে কাজটি পুরোদমে আবার শুরু হয়। এর আগে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এরপর ওই বছরের ২৫ মার্চ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার প্রশাসনিক আদেশ দেয়া হয়। নির্মিতব্য মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ফুটওয়্যার, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি, ফুড প্রোসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন, ওয়েব ডিজাইনিং, ওসনোগ্রাফি, গার্মেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্নমেকিং, আর্কিটেকচার অ্যান্ড ইন্টেরিয়র ডিজাইন, সফটওয়্যার ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং অডিও অ্যান্ড সাউন্ড টেকনোলজি কোর্স থাকবে। রংপুরসহ চারটি মহিলা পলিটেকনিক ইসস্টিটিউটে প্রতি বছর ১ হাজার ৬০০ জন নারী শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে। সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর শালবন এলাকায় রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশেই নারীদের জন্য উত্তরাঞ্চলের প্রথম এই মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের নির্মাণযজ্ঞ চলছে। নির্মাণ শ্রমিকরা ঘাম ঝরানো পরিশ্রমে ইট-বালু-সিমেন্টে গড়ছেন বহুতল ভবন।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, পুরো প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের কোথাও ৬০ ভাগ, কোথাও ৮০ ভাগ আবার কোনো ক্ষেত্রে ৩০ ভাগ কাজ এগিয়েছে। তবে নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে মনে করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে রংপুর জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, দেশ ও বিদেশে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ চাকরির বাজারের চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে এই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষার প্রসার ও নারীদের অগ্রাধিকার সম্প্রসারণে যেভাবে কাজ করছে, তারই প্রতিচ্ছবি এটি। রংপুর বিভাগে এটিই প্রথম মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং অন্যান্য ভৌত সুবিধা তৈরির কাজ প্রায় ৮০ ভাগ হয়েছে। আশা করছি বড় কোনো সংকট তৈরি না হলে ২০২৫ সালের মধ্যেই পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে। তবে আগামী বছর থেকেই রংপুর মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত