ঢাকা ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুর অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ১৪৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা

রংপুর অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ১৪৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা

বছরের পর বছর ধরে বিল পরিশোধ না করায় রংপুর বিভাগের আট জেলার ১৫টি পৌরসভার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল দাঁড়িয়েছে ১৪৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। সেবামূলক এসব প্রতিষ্ঠানকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে একাধিকবার চিঠি দেয়ার পরও পাওনা বিল আদায়ে ব্যর্থ হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার ১৬টি প্রতিষ্ঠানের কাছে এই পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া।

২০১৬ সালের ১ অক্টোবর নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) রংপুর বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্ব নেয়। রংপুর বিভাগের আট জেলায় বিদ্যুতের গড় চাহিদা প্রায় ৭০০ মেগাওয়াট। শীতে এ চাহিদা থাকে প্রায় সাড়ে ৫০০ মেগাওয়াট। তবে গ্রীষ্মকালে জমিতে সেচ এবং বিভিন্ন কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পায়।

নেসকো রংপুর বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সেবামূলক ১৬টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলবাবদ ১৪৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা পাওনা আছে রসিকের কাছে এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বকেয়া পাওনা দিনাজপুর পৌরসভার কাছে ৩৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা। যার সিংহভাগ অনাদায়ী রয়েছে বছরের পর বছর।

এদিকে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২০১১ সালে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলবাবদ পৌনে ৫ কোটি টাকার দায় নিয়ে তিনি পৌরসভার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তার পৌরসভার মূল আয় নাগরিকের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা থেকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করলে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হয় না। তারপরও প্রকল্প নেই বললেই চলে। এছাড়াও দিনাজপুরের পৌর মেয়র উল্টো নেসকোর কাছে জমিবাবদ ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা পাওনা দাবি করছেন। তিনবারের নির্বাচিত এই মেয়র বলেন, ভবনবাবদ ২০১২ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে আমাদের পৌরসভার প্রায় ৩৬ কোটি টাকা পাওনা হয়েছিল যা এখন বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা। এ বিষয়ে গঠিত কমিটি সত্যতাও পেয়েছেন এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চিঠি চালাচালিও হয়েছে, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। এখন আমাদের পাওনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও আমরা সাধ্যমতো বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছি।

এতো টাকা বকেয়া রাখা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রংপুর সিটি করপোরেশন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, তার দুই মেয়াদের কোনো বিদ্যুৎ বিল বাকি নেই। সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার আগে পৌরসভা থাকাকালীন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। গত রোববার বিকালে নেসকোর রংপুর বিতরণ অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসনাত জামান জানান রংপুর গ্রিডে বিদ্যুতের গড় চাহিদা ৬৫ মেগাওয়াট। যা নেসকো-১, নেসকো ২, নেসকো-৩ অর্থাৎ রংপুর সিটি কর্পোরেশনের পুরো এলাকা। নেসকোর রংপুর বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া মিলছে না। সড়কবাতি ও পানি সরবরাহের মতো অতি জনগুরুত্বপূর্ণ সেবার কথা চিন্তা করে কোনো ব্যবস্থাও নিতে পারছেন না তারা। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত চিঠি দেয়া হয়। এছাড়া মৌখিকভাবেও অনুরোধ করা হয়। কেউ কেউ সাড়া দিয়ে বকেয়া বিল দিচ্ছে, তবে চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত