নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ও জেলা কৃষক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি দৌলত হোসেন মেম্বার হত্যা মামলার প্রধান আসামি গোগনগর ইউপির ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার রুবেলসহ ১৬ আসামির এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে আসামিদের হাজির করে জামিন আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে রিমান্ড শুনানি হয়। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত ৯ মে আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, দৌলত মেম্বার হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করে জামিন প্রার্থনা করা হয়। আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করেন। একই সময় রিমান্ড শুনানি হয় এবং শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেক আসামির একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত গত বছরের ২৬ জুলাই দৌলত হোসেন মেম্বার রাতে ওষুধ ক্রয়ের জন্য বাসা থেকে বের হলে পুরাতন সৈয়দপুর তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর সামনে সিএনজি দিয়ে পৌঁছামাত্রই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দৌলত মেম্বারকে সিএনজি থেকে নামিয়ে রামদা দিয়ে তার মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয় এবং শীতলক্ষ্যা ব্রিজের ঢালে রক্ষিত পাথর দিয়ে দৌলত হোসেন মেম্বারের হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়। এ সময় দৌলত মেম্বারের পায়ের রগ কেটে এবং পা কেটে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করার পর চরসৈয়দপুর এলাকায় সিএনজি পাম্পের সামনে তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ঘাতকরা। পরবর্তীতে লোক মারফত দৌলত হোসেন মেম্বারের পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে প্রথমে তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং অবস্থা বেগতিক দেখে পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার একদিন পর নিহত দৌলত হোসেন মেম্বারের স্ত্রী মমতাজ বেগম গোগনগর ইউপি সদস্য রুবেলকে প্রধান আসামি করে এবং ইমরান, রানা, হিমেল, শাওন, আমির, হিমু, ফাহাদ, তাওলাদ হোসেন, আমির হোসেন, রিহান, হাবিব, সাদ্দাম, শুভ, আবুল কাশেম, মাসুদ, লুৎফর, নাজির, রাসেলসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ১৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা করার পর সেলিম নামে এক আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও বাকি সব আসামি দীর্ঘ ১০ মাস পলাতক থাকার পর ৯ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত আসামিদের জেলহাজতে প্রেরণ করেন।