সরবরাহ না থাকায় রাজশাহীতে হজযাত্রীর টিকা কার্যক্রম বন্ধ আছে। এতে বিপাকে পড়েছেন হজযাত্রীরা। দূরদূরান্ত থেকে সিভিল সার্জন অফিসে এসেও ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। গতকাল বুধবার সকালে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন অফিসে থাকা ৭০টি টিকা দেয়ার পর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হন হজযাত্রীরা।
সিভিল সার্জন অফিস বলছে, হাজীদের টিকা সংকট পড়েছে। ঢাকা থেকে এনে সমাধান দেয়া হবে। রাজশাহী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, জেলায় এবার সরকারি ও বেসরকারি মিলে ২ হাজার ৪৬৭ হজযাত্রী আছেন। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন ৬৫৭ জন। বাকিরা যাচ্ছেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে, হজে যাওয়ার আগে মেনিনোকোকাল ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা দিতে হয়। প্রত্যেক হজযাত্রীকে এ দুটি টিকা সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে দেয়া হয়। চলতি বছরের ৮ মে থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। গতকাল বুধবার রাজশাহী মহানগরীর হেতমখা এলাকায় অবস্থিত রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিস ঘুরে দেখা গেছে, হজযাত্রীদের টিকা নিতে লম্বা লাইন। তবে ৭০ জনকে টিকা দেয়ার পর আর দেয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছে টিকা শেষ হয়ে গেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হজযাত্রীরা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত হজযাত্রীদের সেখানেই বসে থাকতে দেখা গেছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনা হজ এজেন্সি নিশাত ট্রাভেলসের ম্যানেজিং পার্টনার আতাউর রহমান বলেন, চলতি বছর আমাদের ১৭০ জন হজে যাবেন। এরা সবাই রাজশাহীর। গত কয়েকদিন আগে এসে তাদের তালিকা ও অনলাইন রেজিস্ট্রেশন জমা দেয়া হয়েছে। তারা আজকের ডেট দিয়েছিল। তবে এখানে এসে দেখছি টিকা পায়নি। তিনি আরো বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে টিকা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণেই মূলত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। আমাদের ঢাকা হজ ক্যাম্প থেকে টিকা নেয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। তবে সেখানে সময় না পাওয়া ও হাজীদের টিকা পেতে বেশ বেগ পেতে হবে। আমরা অনুরোধ করব দ্রুত রাজশাহীতেই যেন টিকার কার্যক্রম শেষ হয়।
টিকা নিতে আসা মাহমুদুল আমিন বলেন, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। শুরুতে বলা হচ্ছিল আজকে ১৫০ জনকে টিকা দেবে। আমি ২৭ বা ২৮ নম্বরে সিরিয়ালে ছিলাম। ২৫ জনের সিরিয়াল শেষ হওয়ার পর জানানো হয় টিকা দেয়া হবে না। এভাবে হজের শেষ মুহূর্তে এসে আমাদের বিলম্ব করা ঠিক হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের একটাই দাবি দ্রুত টিকা এনে তা সরবরাহ করার জন্য। যাতে সহজেই আমরা রাজশাহী থেকে টিকা নিয়ে হজের জন্য যেতে পারি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজশাহীর পরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার গণমাধ্যমকে বলেন, হাজিরা টিকা নিতে পারছে না এমন একটি সংবাদ আমরা পেয়েছি। তবে আমরা শুধু ব্যবস্থাপনা ও তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকি। টিকা সংক্রান্ত সব কিছুর দায় দায়িত্ব সিভিল সার্জন অফিসের।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমাদের যতজন যাত্রী ঠিক ততগুলোই টিকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই কারো কারো আত্মীয়স্বজন অন্য জেলার এসেও এ জেলা থেকে টিকা নিয়ে গেছেন। ফলে কিছু টিকার সংকট পড়েছে। ঢাকাতেও ভ্যাকসিন নেই। তবে বাকি টিকাগুলো আমি ঢাকা থেকে ব্যবস্থা করে ফেলব। তিনি আরো বলেন, আমরা হিসাব করতে বলেছি। আমাদের ধারণা খুব বেশি শর্ট হবে না। ১০০ থেকে দেড়শ’ জনের মতো কম থাকতে পারে। ঢাকাতে আমি যোগাযোগ করেছি হয়তো দুই-তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা করে দেব। টিকা ছাড়া একজন যাত্রীও যাবে না। সবার টিকা পাবে এ নিয়ে চিন্তার কারণ নেই।