রংপুরে দখলমুক্ত হলো ২৪০ বছরের প্রাচীন মসজিদ

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

স্মৃতি বিজড়িত পীরগাছার নাপাই চন্ডিপুরে মোগল আমলে নির্মাণ করা তিন গম্বুুজবিশিষ্ট এক কাতার মসজিদটি দখলমুক্ত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন মামলা-মোকদ্দার পর অবশেষে গত এক সপ্তাহ থেকে মসজিদ প্রাঙ্গণে ওয়াক্তিয়া নামাজ আদায় শুরু করেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। প্রায় ২৪০ বছরের প্রাচীন মোগল আমলের এ মসজিদটি একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন নিজেরা ভোগদখল করে আসছিল। অবশেষে মামলা-মোকদ্দমার রায় ‘পীরপাল গাজী সাহেবের মসজিদ’ নামে স্থানীয় মুসল্লিদের পক্ষে দেয়া হলে গত এক সপ্তাহ থেকে তারা জরাজীর্ণ তিন গম্বুজবিশিষ্ট এক কাতার মসজিদটির সামনে টিনের চালা তুলে আনুষ্ঠানিকভাবে নামাজ আদায় শুরু করেন। এতে করে সাধারণ মুসল্লিদের মাঝে উৎফুল্লতা দেখা গেছে।

ইতিহাস থেকে দেখা গেছে, দেবী চৌধুরানীর স্মৃতি বিজড়িত চন্ডিপুরেই মোগল আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি ছোট্ট তিন গম্বুুজবিশিষ্ট মসজিদ। মসজিদের দেয়ালের আস্তরণ খসে পড়েছে অনেক আগেই। দেয়াল ভেদ করে গজিয়ে উঠেছে গাছ-গাছালি আর লতাপাতা। ওপরের বিশাল আকৃতির তিন গম্বুজে ফাটল ধরেছে। এরই মধ্যে চারপাশের চারটি মিনার ধসে পড়েছে। কালের পরিক্রমায় ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত মসজিদটি সংস্কার বা সংরক্ষণ করা হয়নি। উল্টো জোরপূর্বক পীরপাল গাজী সাহবের জমিজমা দখল করে ভোগদখল করেছে একটি প্রভাবশালী মহল। সম্প্রতি সহকারী জজ আদালত বদরগঞ্জ, রংপুরের সহকারী জজ ফাইরুজ তাসনীম চন্ডিপুর পীরপাল গাজী সাহেবের মসজিদ কমিটির পক্ষে রায় প্রদান করেন।

গতকাল শুক্রবার মসজিদ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা এক কাতার মসজিদটির সামনে টিনের চালা তুলে মাটি কেটে মসজিদ তৈরি করছেন স্থানীয় লোকজন। সামনে বসানো হয়েছে নলকূপ। ১৫ থেকে ২০ জন মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করছেন। সকলের এক কথা ২৪০ বছর পর এই স্থানে নামাজ আদায় করা হলো। এতে একটি মসজিদের জায়গা উদ্ধার হলো।

মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুল গোফ্ফার মিয়া বলেন, ইতিহাস কখনো মুছে যায় না। ইতিহাস ঘাটলে সব জানা সম্ভব। মোগল আমলে যে এখানে মানুষ নামাজ আদায় করতো তা আজ প্রমাণ হয়েছে। আমরা মসজিদের পক্ষে রায় পেয়েছি। এখন মুসল্লিরা এখানে ওয়াক্তিয়া নামাজ আদায় করবেন। সে জন্য সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এসময় সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলম, সদস্য মিলন মিয়া ও আবদুল মালেক বলেন, গ্রামের সব লোক মসজিদের পক্ষে। তারাও চাচ্ছিলেন মসজিদের জায়গা দখলমুক্ত হোক। আমরা এ নিয়ে অনেক ঘোরাঘুরি করে আদালতের রায় পেয়েছি। আজ আমরা সার্থক। আমরা চাই সব ভেদাভেদ ভুলে এই মসজিদটি একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পাক। এ জন্য আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।