ঢাকা ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বামীকে হত্যার পর গ্রেপ্তার এড়াতে ছদ্মবেশ ধারণ স্ত্রীর

স্বামীকে হত্যার পর গ্রেপ্তার এড়াতে ছদ্মবেশ ধারণ স্ত্রীর

নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইলে মোহাম্মদ রানা হত্যা মামলায় পলাতক স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার রোজি ওরফে রোজিনাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। গত বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে রাজধানীর পল্লবী এলাকার শতাব্দী আনন্দধারা হাউজের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার রোজিনা বরিশাল উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের লিয়াকত হোসেনের মেয়ে ও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বাবুরাইল ব্যাপারীপাড়া এলাকার নিহত মোহাম্মদ রানার স্ত্রী।

গতকাল শুক্রবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব-১১ জানায়, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর নগরীর ১নং বাবুরাইল এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর ছুরিকাঘাতে স্বামী হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা আহম্মদ আলী বাদী হয়ে নারায়য়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর থেকে নিহতের স্ত্রী আসামি রোজিনা আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে গিয়ে আসামি রোজিনা বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিল। সে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিয়ে কাজে নিযুক্ত হয়। উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহসহ আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য র‌্যাব-১১ গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় রোজিনা পল্লবী এলাকায় শতাব্দী আনন্দধারা হাউজিংয়ের একটি বাসায় পরিচয় গোপন করে কাজের বুয়ার পেশায় নিযুক্ত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১১ বৃহস্পতিবার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

র‌্যাব-১১ উপ-পরিচালক (স্কোয়াড্রন লিডার) একেএম মুনিরুল আলম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ভিকটিম মোহাম্মদ রানা ১নং বাবুরাইল মোবারক শাহ রোডের রাজন মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করত এবং স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার রোজি ওরফে রোজিনা ময়মনসিংহ ভালুকার সিস্টোর এলাকায় বাস করত। মোহাম্মদ রানা একটি ঔষধ কোম্পানিতে এবং স্ত্রী রোজিনা একটি এনজিওতে চাকরি করত। স্বামী ও স্ত্রী দুজন দুটি আলাদা স্থানে চাকরি করার কারণে আলাদাভাবে বাস করত। মাঝে মধ্যে স্ত্রী রোজিনা তার স্বামীর বাসায় এসে দেখা স্বাক্ষাৎ করে চলে যেত। দুজন ভিন্ন স্থানে বসবাস করার কারণে দুজনের সম্পর্কের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং পারিবারিক কলহে রূপ নেয়। এই কলহের জেরে দুজনের মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাদ ও তর্ক-বির্তক লেগে থাকত। গত ৭ ডিসেম্বর রোজিনা তার স্বামীর বাসায় আসলে ভিকটিম তার বাবাকে স্ত্রীর বাসায় আসার বিষয়ে ফোন করে জানায় এবং ভিকটিমের বাবা ফোন পেয়ে বাসায় এসে তাদের সঙ্গে দেখা করে চলে যায়।

তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন রাতে ভিকটিমের স্ত্রী রোজিনা ধারালো ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। ভিকটিমের চিৎকার শুনে পাশের রুমের ভাড়াটিয়া রেশমা বেগম এসে দেখতে পায় ভিকটিম গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে আছে এবং ভিকটিম রেশমা বেগমকে জানায় তার স্ত্রী তাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে পালিয়েছে। পরবর্তীতে বাসার মালিক ও আশপাশের লোকজন ভিকটিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রানাকে মৃত ঘোষণা করে।

গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত